দুর্নীতি করতে হলে হাসিমুখে দায়িত্ব ছেড়ে দেব : মেয়র নাছির

চট্টগ্রাম: দুর্নীতি করতে হলে হাসিমুখে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের দাবি, ‘চসিকের উন্নয়ন কাজে কোন দুর্নীতি নেই।’

সোমবার সকালে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সুধি সমাবেশে মেয়র এ কথা বলেন। মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের ২ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সমাবেবেশের আয়োজন করে চসিক।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বিগত ২০ বছরের তুলনায় সকল প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে চসিককে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে আনা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে উন্নয়ন কার্যক্রমে কোন ধরনের অব্যবস্থাপনা ও দূর্নীতি নেই। উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারগণ স্বাধীনভাবে অনলাইনে আবেদন করতে পারছে।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ ১৮৮০ সাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর অধিবাসী। নাগরিক দায়বদ্ধতা আমাদের রয়েছে। নাগরিকদের সেবা দেয়ার জন্য দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি। চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থে জীবন দিয়ে দায়িত্ব পালন করব। যদি দূর্নীতির আশ্রয় নিতে হয় হাসি মুখে দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাব।

মেয়র বলেন, নগরবাসীর নিকট থেকে যে সকল খাতে পৌরকর গ্রহণ করা হয় তাদের প্রতিটি পয়সার ব্যয় সঠিকভাবে করা হচ্ছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশের স্বার্থে পরিচ্ছন্ন কাজের আমুল পরিবর্তন করা হয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরবাসীকে নির্দ্দিষ্ট স্থানে আবর্জনা ফেলার আহবান জানানো হয়েছে। পরিচ্ছন্ন বিভাগ রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত আবর্জনা অপসারন কাজে নিয়োজিত থাকে।

তিনি বলেন, নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নগরীকে এলইডি লাইটিং এর আওতায় এনে নগরীকে শতভাগ আলোকিত করা হবে। নগরীর অলি-গলি, রাজপথ শতভাগ কার্পেটিং করা হবে। এক ইঞ্চি জায়গাও কাঁচা সড়ক থাকবে না। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়াদ শেষে পাই টু পাই ওয়াদা বুঝে নেয়ার জন্য নগরবাসীকে আহবান জানান।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সততা, সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হচ্ছে। কাউন্সিলর চসিক এর কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে শতভাগ নাগরিক সেবা নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার প্রয়াস চলছে। সরকার চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা লাঘবে আন্তরিক। এ লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণিত হচ্ছে। কিছুটা সময় দিন জলাবদ্ধতা নিরসন সহ কাংখিত সকল উন্নয়ন নির্দ্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে।

মেয়র বলেন, সুধি সমাজের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের পরামর্শ মতে আইনী কাঠামোর মধ্যে থেকে সচেতনতার সাথে নাগরিক প্রত্যাশা পুরনের চেষ্টা করছি। নগরবাসীকে দেয়া প্রতিটি ওয়াদা ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে পুরন করব।

তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের কার্যক্রমের সকল তথ্য উপাত্ত সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে কোন ধরনের ভুল ভ্রান্তি থাকলে তার দায় আমি নিতে প্রস্তুত আছি। তিনি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, এবারের বাজেট বাস্তবতার নিরিখে বাস্তবায়ন যোগ্য প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘোষিত বাজেটে কোন ধরনের কৃত্রিমতা নেই।

সুধি সমাবেশে সিটি মেয়রের বিগত দুই বছরের কার্যক্রমের উপর আলোচনা করেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খানম, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চের সম্পাদক সৈয়দ ওমর ফারুক, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মো. মজিবুল হক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা কমান্ডের কমান্ডার মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম।