চট্টগ্রাম: মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মো. ইসহাক মিয়া আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে চট্টগ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সোমবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে নগরীর মেহেদিবাগে ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই রাজনীতিক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন আমাদের সর্বজনশ্রদ্ধেয় নেতা ইসহাক মিয়া। রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় তাকে ম্যাক্স হাসপাতালে আনা হয়েছিল। সোমবার ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে প্রয়াতের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ইসহাক মিয়ার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তার বাসা নগরীর আগ্রাবাদের হাজীপাড়া এলাকায়। প্রবীণ এই নেতা স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
ইসহাক মিয়া ১৯৭০-এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে গণপরিষদের সদস্য হয়েছিলেন। ’৫৪ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগে যুক্ত। ছিলেন চট্টগ্রামের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর, এমএনএ এবং এমপি। নিযুক্ত হয়েছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরের প্রশাসকও। বর্তমানে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। ত্যাগী ও পরীক্ষিত এই নেতা নিজ দলের নবীন-প্রবীণ সবার শ্রদ্ধেয়।
মহান ভাষা আন্দোলনের এই কর্মী ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-এর সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর সম্মিলিত বিরোধী দলের আন্দোলন, ’৬৮-৬৯-এর গণআন্দোলন, ’৭০-এর নির্বাচন, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ হয়ে ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ, ’৭৯ ও ’৮৬-এর নির্বাচন, ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ’৯৬ ও ২০০১-এর নির্বাচন, ২০০৭-এ ওয়ান-ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়ে জনমত সৃষ্টি ও কারামুক্তি আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এই প্রবীণ নেতা। কারাভোগও করেছেন বার বার।
ইসহাক মিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে গেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।