চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ‘পৌর পুলিশ’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার।
সোমবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা মিলনায়তনে বাজেট বক্তৃতায় এই জনপ্রতিনিধি জানান পৌরসভা আইন ২০০৯ অনুযায়ী পৌর পুলিশ গঠনের বিধান রয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার বলেন, ‘আইন অনুযায়ী পৌর পুলিশ গঠন করা হবে। শিগগিরই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে চিঠি লিখব। আশা করছি, এরপর তারা আইন অনুযায়ী অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু করবে।’
পৌর পুলিশের চাকরি ও কার্যকলাপ কেমন হবে তাও জানান মেয়র; ‘আইন অনুযায়ী পৌর পুলিশে নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা ও অন্যান্য চাকুরির শর্ত বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। তাদেরকে পুলিশ বাহিনী প্রশিক্ষণ দিতে পারে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানানোর পর এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।’
মো. শাহজাহান সিকদার বলেন, ‘আইনের বিধান অনুযায়ী পৌর পুলিশ পরিচালনার জন্য সরকার উপযুক্ত পদমর্যাদার কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। পৌরসভা আইনসহ অন্যান্য আইন ভাঙলে শাস্তি দিতে পৌরসভার সচিব বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিচারিক ক্ষমতা দিতে পারে সরকার; এমনকি প্রেষণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগও দিতে পারে।’
‘পৌরসভা আইনে বলা আছে, স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে পৌর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নজরদারি করবে পৌর পুলিশ।’ -যোগ করেন রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র।
এর আগে সোমবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ১৭ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার।
ঘোষিত বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে উন্নয়ন খাতে ১১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩১ টাকা। সাধারণ সংস্থাপন খাতে ১ কোটি ৭৩ লাখ ২০ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৯৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সরকার হতে উন্নয়ন খাতে আয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ২৯ লাখ ৯ হাজার ৫২০ টাকা।
বাজেটে মোট আয় ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৯ হাজার ৫২০ টাকা। প্রারম্ভিক স্থিতি ৪ কোটি ২ লাখ ৩০ হাজার ১১১ টাকাসহ সর্বমোট আয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩১ টাকা। অন্যদিকে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৭০ লাখ ৮৫ হাজার। সমাপনী স্থিতি ৪ কোটি ৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৩১ টাকাসহ সর্বমোট ব্যয় ধরা হয় ১৭ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩১ টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার বলেন, ‘আমাদের সাধ আছে। কিন্তু সাধ্য সীমিত। তবুও হাজারো বাধা পেরিয়ে পিছু না হটে আমরা উন্নয়নের অগ্রগতির দিকে এগিয়ে চলেছি। পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সড়কবাতির ব্যবস্থা করেছি। গোচরা বাজার থেকে রাঙ্গুনিয়া কলেজ পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে সড়কবাতির কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক বাতিগুলোতে সৌর বিদ্যুতায়নের মহাপরিকল্পনা নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি সরকারের কাছ থেকে দুইটি রোড় রোলার, দুইটি গার্ভেজ ট্রাক ও একটি পে লোডার পেয়েছি। এর ফলে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ ও যথাস্থানে ফেলার কাজে আরও গতি আসবে। পৌরসভার জন্য ২০ বছর মেয়াদী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে। পৌর অডিটরিয়াম নির্মাণের লক্ষে দশমিক ৮৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।’
বাজেট ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য কামরুল ইসলাম চৌধুরী, পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব মো. আল হেলাল ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আলী মো. এরশাদ প্রমুখ।