চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দলটির ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এবার আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে মামলাটি করেছেন রাঙ্গুনিয়ার সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. মহসিন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- শওকত আলী নুর, ইউসুফ মিয়া চৌধুরী, মাহবুব ছাফা, রফিকুল ইসলাম, নিজামুল হক তপন, মাসুদুল হক মাসুদ, নিজাম উদ্দিন, মো. আনসুর আলী, করিম, জিয়াউর রহমান, মোহম্মদ মুরাদ, মো. ইলিয়াছ, মো. বাবুল, গোলাম ফারুক, আজিজুল হক, মো. আলমগীর, মো. ছাদিকুর রহমান, ওমর ফারুক, সাইফুল, সৈয়দ নুর, নুরুল আলম, গোলাম নবী আপেল, এমএ আজিজ, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুর রহমান শওকত, হানিফ সওদাগর।
আসামিদের মধ্যে শওকত আলী নুর রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি। অন্যরা রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও বিএনপি, যুবদল এবং ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে মামলার আরজিতে আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মির্জা ফখরুলের গাড়িবহর রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. মহসিন ও আব্দুল আজিজের গাড়িতে ধাক্কা দেয় ও তাদের চাপা দেয়। এসময় তারা প্রতিবাদ করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা গাড়ি থেকে নেমে তাদের মারধর করে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। আহত দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বাদির আইনজীবী নিখিল কুমার নাথ বলেন, ভুক্তভোগী সিএনজি অটোরিকশা চালক মহসিন বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় মামলা করেছেন। মামলায় ২৬ জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে এর আগে বুধবার একই ঘটনায় একই আদালতে মামলা করেন বিএনপি নেতা ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. এনামুল হক। দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় দাখিল করা মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলাটি ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত গত রোববার পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটিতে যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ায় হামলার মুখে পড়ে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহর। হামলার পর রাঙামাটি যেতে না পেরে চট্টগ্রামে ফিরে আসে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলটি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ওই হামলার জন্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদকে দায়ী করেন। তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, মির্জা ফখরুলদের গাড়ির ধাক্কায় স্থানীয় দুজন আহত হলে বিক্ষুদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা হামলা করে।