রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

একুশে পত্রিকার আড্ডায় ভালোবাসার জলখেলি

| প্রকাশিতঃ ২১ জুন ২০১৭ | ২:০২ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম : কোনো ব্যানার নয়, থাকবে না নির্দিষ্ট কোনো অতিথি কিংবা বক্তৃতাপর্ব, থাকবে না তথাকথিত ইফতারপার্টির নামে শোডাউন করে গণমাধ্যমে নিজেদের জাহির করার তাড়া। সব ছাপিয়ে স্র্রেফ ভক্ত, শুভানুধ্যায়ীদের গল্প-আড্ডার আয়োজনটিই হয়ে উঠে ভালোলাগা-ভালোবাসার অপূর্ব এক জলখেলি। আর এই জলখেলির উদ্যোক্তা যিনি তিনি আর কেউ নন, একুশে পত্রিকার পরম সুহৃদ, সম্পাদকীয় পরামর্শক নজরুল কবির দীপু।

মঙ্গলবার মোমিন রোডের সাফরান রেস্টুরেন্টে ইফতারপূর্ব মুহূর্তে একুশে পত্রিকার অভ্যাগত শতাধিক শুভার্থীর মাঝে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, মিয়ানমারের প্রাক্তন বাংলাদেশ মিশনপ্রধান সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) একেএম এমদাদুল ইসলাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বকনিষ্ঠ যোদ্ধা পরিবেশ আন্দোলনের নেতা প্রফেসর মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী, প্রাক্তন ছাত্রনেতা সিসিসি’র চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিম, একসময়ের ছাত্রনেতা প্রাক্তন কাউন্সিলর মো. নাজিম উদ্দিন, ’৮০-এর দশকের তুখোর ছাত্রনেতা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি আলী আকবর চৌধুরী, আন্তর্জাতিক ইসলামী ত্রাণসংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. খালেদ মাহমুদ, চট্টগ্রামের নারী আন্দোলনের নেত্রী প্রাক্তন কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু, কবি আখতারী ইসলাম, নারী উদ্যোক্তা মেহের আফরোজ হাসিনা, পরিবেশবান্ধব রিফ লেদারের পরিচালক মোখলেসুর রহমান-এর মতো গুনী ও যশশ্বী মুখগুলো যখন সন্ধ্যার তাঁতিয়ে উঠা অন্ধকারে ‘সন্ধ্যাতারা’ হয়ে উঠে তখন স্বাভাবিকভাবেই আড্ডার বাঁক পরিবর্তন হবে, অডিয়েন্স শুনতে চাইবে ‘কিছু একটা’ সেটাই স্বাভাবিক।

অডিয়েন্সের ব্যাকুলতা আঁচ করতে পেরে দাঁড়িয়ে গেলেন একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদার। এক এক করে পরিচয়-পর্বের সুঁতোয় গাঁথলেন অনেককে; জানালেন একুশে পত্রিকা নিয়ে তাঁর স্বপ্নমঙ্গলের কথা।

এরপর একুশে পত্রিকাকে একে একে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত করলেন অভ্যাগতরা। শুভ কামনা জানাতে উঠে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘একসময় আমি নিজেও সাংবাদিক ছিলাম। আমার জীবন-জীবিকা শুরু হয়েছিল মহান সাংবাদিকতা পেশা দিয়েই। সেই সাংবাদিকতার জ্ঞানে আমি যতটুকু বুঝি এবং জানি তাতে আমার মনে হয়েছে একুশে পত্রিকা গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে নতুনধারার সাংবাদিকতা করছে। এই ধারা বজায় থাকলে অচিরেই একুশে পত্রিকা দেশের সাংবাদিকতায় মহোত্তম জায়গা করে নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

মেজর (অব.) একেএম এমদাদুল ইসলাম বলেন, আজ আমার অনেক কর্মব্যস্ততা, অনেকগুলো ইফতার-আয়োজন। আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, এতসব ছাপিয়ে আমি একুশে পত্রিকার এই ঘরোয়া আড্ডায় কেন? এর কারণ একটি; আর তা হলো একুশে পত্রিকা আমাকে জয় করেছে, অর্জন করেছে। আমি সুন্দরের একনিষ্ঠ মানুষ। সত্য-সৃষ্টি-সুন্দরের আহ্বানে আমাকে আসতেই হবে।

তারেক সোলেমান সেলিম বলেন, সাম্প্রতিক কিছু সাহসী প্রতিবেদন করে বেশ আলোচনায় এসেছে একুশে পত্রিকা। মাস তিনেক আগে রাজনীতির একটি দুর্দান্ত সাহসী রিপোর্টের সন্ধান পেয়ে আমি একুশে পত্রিকার সাইডে ঢুঁ মারি। আর তখন থেকেই আমি একুশে পত্রিকার ভক্ত। আমি বিশ্বাস করি, এই পত্রিকা দিয়েই হবে সত্যিকার সাংবাদিকতা চর্চা।’

মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ইদানীং প্রায়ই দেখা যায় সাংবাদিকতার জায়গায় সাংবাদিকতা থাকছে না। অপসাংবাদিকতার ভিড়ে একুশে পত্রিকা সুস্থ সাংবাদিকতা করতে চাইছে, চেষ্টা করছে সেটা অনেক বড় কথা।’

মো. খালেদ মাহমুদ বলেন, আমি একুশে পত্রিকার ১০ বছরের পুরোনো পাঠক-গ্রাহক। এই দীর্ঘসময়ে আমার মনে হয়েছে একুশে পত্রিকার মাঝে একটা নিজস্ব স্বকীয়তা, স্বতন্ত্র্যতা বিরাজমান। এই স্বতন্ত্র্যতা ধরে রাখতে আমাদের সবার উচিত পত্রিকাটিকে এগিয়ে দেওয়া।

আজাদ তালুকদার বলেন, সাপ্তাহিক একুশে পত্রিকার নিয়মিত প্রিন্ট ভার্সন বের হয় ১৩ বছর ধরে। পেশাগত কারণে নানা হাউসে সাংবাদিকতার চাকরি করেও সন্তানের মতো পত্রিকাটিকে আমি লালন করছি, ধরে রেখেছি। গেল বছর পত্রিকাটির ২৪ ঘণ্টা অনলাইন ভার্সন চালু হওয়ার পর অভাবনীয় পাঠকসাড়া প্রতিদিনই আমাদের মাঝে নিত্যনতুন সৃষ্টির উন্মাদনা তৈরি করছে।

তিনি বলেন, ‘সংবাদের উপাদান যদি হন আমার বাবা সংবাদ পরিবেশনে তার সঙ্গেও কোনো আপস নেই’ এই চ্যালেঞ্জ ও অঙ্গীকারে একুশে পত্রিকার অনুসন্ধানী টিম নিরন্তর কাজ করছে। আর সেটি করতে গিয়ে একুশে পত্রিকা ‘রাঙ্গুনিয়া কলেজ থেকে বিএ পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’, ‘আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে জঙ্গিদলে’, ‘এসআই সোহেল গোপালগঞ্জের, কেয়ার করেন না ওসি, এসপি ডিআইজি’ শিরোনামে অডিও-ভিডিও জুড়ে দিয়ে অনেক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন মুহূর্তের মধ্যে লাখ লাখ পাঠকের কাছে নতুন বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে।

অনলাইন পোর্টালে পেশাদার ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিমিশে ব্যাপক সাড়া ফেলা যায়, সবমহলের দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যায় তা একুশে পত্রিকা প্রতি মুহূর্তে উপলব্ধি করে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, মোবাইল ফোনে হবে সব সাংবাদিকতা। আর সেই মোবাইল ফোনের সাংবাদিকতায় একুশে পত্রিকা থাকবে এগিয়ে। করবে সুস্থ ও সাহসী সাংবাদিকতা। যোগ করেন আজাদ তালুকদার।

এরপর শুভানুধ্যায়ীদের কুশল জানতে আড্ডার টেবিলে টেবিলে ছুটে যান সম্পাদক আজাদ তালুকদার। তখনই একুশে পত্রিকা নিয়ে চমৎকার উচ্ছ্বাসের প্রকাশ ঘটান দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মাসুদ ফরহান অভি; ‘বলেন একুশে পত্রিকার পাঠকফোরাম হলে আমি তাতে অগ্রভাগে থাকতে চাই। আমি পত্রিকাটির নিয়মিত পাঠক, সুহৃদ। প্রথমসারির অনেক পত্রিকার চেয়েও একুশে পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্টগুলো পড়ার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উন্মুখ হয়ে থাকে।

একঘণ্টার এই আড্ডা আয়োজনে শামিল হয়ে আরও যারা উজ্জ্বলতার দ্যুতি ছড়িয়েছেন তারা হলেন দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া পদুয়া ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি নুরুল আবছার তালুকদার, সংগীতশিল্পী অ্যাডভোকেট শুভাগত চৌধুরী, সংস্কৃতিকর্মী নিলিমা বড়ুয়া, বিএনপি নেতা ও তরুণ শিল্পোদ্যাক্তা আলহাজ এইচএম জামাল উদ্দিন, ওমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন কর্মকর্তা আলহাজ শওকত হোসেন তালুকদার, পরিবেশ সংগঠক সেফ দ্যা নেচার-এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য নিপুল দে, চ্যানেল নাইনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ফয়সাল করিম, যমুনা টেলিভিশনের জিয়াদ হোসাইন, এটিএন বাংলার প্রাক্তন রিপোর্টার শাহরিয়ার হাসান, দৈনিক বণিকবার্তার সিনিয়র রিপোর্টার সুজিত সাহা, সাংবাদিক আলম দিদার, দৈনিক আজাদীর চিত্রসাংবাদিক আমিন মুন্না, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিক আহমেদ সাজিব, অর্থ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন খোকন, কার্যকরী সদস্য দীপঙ্কর বাবু, ক্যামেরা জার্নালিস্ট রনি দাশ, অমিত দাশ, সনজিত দে বাবু, সাংবাদিক শরীফুল রুকন, সুজন আচার্য, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সাজ্জাত হোসেন, প্রাক্তন ছাত্রনেতা ফজলুর রহমান পাপন, যুবলীগ নেতা মোস্তফা নূর বিপ্লব, মো. সাহেদ, পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ বুলবুল অর্পণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিবিএ ফ্যাকাল্টি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজিব জুনায়েদ সফল, চবি নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল জায়েদ সিকদার সম্রাট, একুশে পত্রিকার শুভার্থী আদৃতা কবির প্রিয়ন্তী, উন্নয়নকর্মী সানজিদা বর্ষা, চিটাগাং আইটি ফেয়ারের উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম, একুশে পত্রিকার মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ দিদারুল ইসলাম, মাওলানা আলাউদ্দিন, মহিলা লীগ নেত্রী রাজিয়া বেগম, নাসিমা আকতার প্রমুখ।