আজ পহেলা আষাঢ়

ঢাকা: আষাঢ়ের রয়েছে ভয়ংকর সৌন্দর্য, পাশাপাশি তার আশীর্বাদে প্রকৃতি ভরে ওঠে ফুলে-ফসলে। ঋতু বৈচিত্র্যে আষাঢ়ের এমন স্বরূপ বর্ণিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের এই গানটিতে। ষড়ঋতুর একটি উল্লেখযোগ্য বর্ষা। বর্ষার প্রথম মাস আষাঢ়। আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন। সারাদিন ঝরঝর বৃষ্টি, মাঠঘাট পানিতে থই থই, খাল বিল নদ নদী পানিতে ভরে যায়। ব্যাঙের ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ডাক, কদম কেয়া আর বেলি ফুলের সমারোহ-এ সবই আষাঢ়ের বৈশিষ্ট্য।

জ্যৈষ্ঠের খরতাপে যখন মাটি ফেটে চৌচির, কাঠফাটা রোদে পিপাসায় পথিকের ছাতি ফেটে যায়। ঠিক সেই সময় স্বস্তির বার্তা নিয়ে আসে আষাঢ়। আরো নিয়ে আসে ফুল ও ফসলের বার্তা। রসসিক্ত হয়ে ওঠে প্রকৃতি, উর্বর মাটিতে বৃক্ষ জন্মে। সবুজ হয়ে ওঠে দেশ। এসবই আষাঢ়ের অবদান।

কিন্তু নগর জীবনে আষাঢ়ের বৃষ্টি আশীর্বাদের বদলে বয়ে আনে দুর্ভোগ। বিশেষত রাজধানী ঢাকাতে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর ভারী বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। কয়েক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টি হলে সড়কে জমে হাঁটু পানি, কোথাও কোথাও কোমর পানি। নর্দমার নোংরা পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে যায়। চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে।

একই পরিস্থিতি রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামেও দেখা যায়। সেখানেও সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ এলাকা চলে যায় পানির নিচে। জনজীবনে নেমে আসে সীমাহীন কষ্ট আর দুর্ভোগ। তাই যতই গুণ থাকুক, বাংলাদেশে নগরজীবন আষাঢ়বান্ধব নয়। এ ছাড়া এ সময়ে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বজ্রপাতের ঘটনা এত বেশি ঘটতে দেখা গেছে যে, প্রতিদিন এতে প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আষাঢ় আমাদের কাছে কখনো আশীর্বাদ, কখনো অভিশাপ। তবে অভিশাপটি মানবসৃষ্ট, এতে আষাঢ়ের ওপর দায় চাপানো অবিচার।