মহেশখালের সেই বাঁধ ভাঙলেন মেয়র নাছির

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরী থেকে বৃষ্টির পানি নামার অন্যতম বড় পথ মহেশখালের বন্দর রিপাবলিক ক্লাব সংলগ্ন অংশে দেওয়া বাঁধটি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বাঁধে হাতুড়ির আঘাত করে অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

মেয়র বলেন, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সংসদ সদস্য আফসারুল আমীন ও এম এ লতিফের সাথে পরামর্শক্রমে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জলাবদ্ধতা বাঁধের আগেও ছিল।এখনও আছে।আজকে আমরা তা অপসারণ করব। হয়ত এমনও হতে পারেকিছুদিন পর বলা হবে যে- কেন বাঁধটা ভাঙ্গা হলো? বাঁধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত (বাসিন্দারা) হয়েছে, পুরোপুরিভাবে এটা বলা সঠিক হবে না। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ৮-১০ বছরে আর কখনো এত বৃষ্টি হয়নি।এখন আসলে অতিবর্ষণ হচ্ছে।

বাঁধ অপসারণের পর বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে সেখানে একটি স্থায়ী স্লুইস গেট ও পাম্প হাউস নির্মাণ করার কথাও জানান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

এসময় বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল খালেদ ইকবাল, বন্দর সচিব ওমর ফারুক, চসিকের কাউন্সিলর মো. হাবিবুল হক, শৈবাল দাশ সুমন, শফিউল আলম, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, এইচ এম সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী সুদীপ বসাক বলেন, অপসারণ কার্যক্রমের জন্য লংবুম স্ক্যাভেটার, স্কিট স্টিয়ার লোডার, ব্যাক হো লোডার, ডাম্প ট্রাক, ক্রেনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি-সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। বাঁধটি পুরোপুরি অপসারণে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

এদিকে মহেশখালের বাঁধ ভাঙার আয়োজন দেখতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে ভিড় করতে থাকে কৌতূহলী মানুষ। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশ, বন্দরের নিরাপত্তা রক্ষী ও চসিকের কর্মকর্তাদের।

প্রসঙ্গত ২০১৫ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রামের নগর পরিকল্পনাবিদদের বিরোধিতা উপেক্ষা করেই মহেশখালে বাঁধটি নির্মাণ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বৃষ্টির পানি দ্রুত কর্নফুলী নদীতে নামতে না পারায় আশপাশের বড় একটি অংশের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। বাঁধ নির্মাণের পর থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছেন উজানের ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর এবং ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের বাসিন্দারা।

গত বছরের ২১ মে বাঁধ খুলে দিতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে বৃষ্টিতে বাঁধের উজান ও ভাটির দুইপাশের মানুষই তিন দিন জলাবদ্ধ ছিল। সেসময় বাঁধ অপসারণের দাবি আরও জোরালো হলে ১ জুন নগর ভবনের এক বৈঠকে বাঁধটি অপসারণের ঘোষণা দেন মেয়র নাছির।