সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের তিনজন নিহত

প্রকাশিতঃ ১২ জুন ২০১৭ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম: ইসহাদ জামান, যাওয়াদ জামান ও সাদমান আলম। তিনজনই একই পরিবারের সদস্য। তিনজনই আমেরিকা প্রবাসী। তিনজনই চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব মাদারবাড়ি নিবাসী। নিহত ইসহাদ ও যাওয়াদ দুই ভাই; সাদমান তাদের ফুফাতো ভাই। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তিনজনই। এর ফলে তাদের দুটি পরিবারে আর কোন ছেলে সন্তান রইলো না।

রোববার সন্ধায় চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর টোল রোড়ে তাদেরকে বহনকারী ছবির এই প্রাইভেট কারটি (চট্টমেট্রো- গ ১২-১৩১২) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। সড়ক থেকে ছিটকে পড়লে এই ছবিতে থাকা তিনজনই নিহত হন। ফলাফল যে বাড়ি এই তিন ছেলের কলকাকলিতে মেতে থাকতো আজ সেই বাড়িতে সন্তান হারা বাবা-মা ও স্বজনদের কান্নার রোল। সবার কান্না থেমে গেলেও সন্তান হারা বাবা মায়ের কান্না সারা জীবন চলতে থাকবে।

ইসহাদ ও যাওয়াদ দুই ভাইকে নিয়েই তাদের বাবা-মায়ের সুখের সাজানো ছোট্ট সংসার। একসাখে দুই ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায় সম্প্রতি ওমরা করে ফেরা ইসহাদ ও যাওয়াদের বাবা কামরুজ্জামান। ঘটনাস্থলে রক্তে ভেজা দুই ছেলের নিথর দেহকে আগলে ধরে তাকে মাতম করতে দেখে আসপাশের মানুষের চোখ পর্যন্ত ভিজে উঠে।
যাওয়াদ আইইউবিতে বিবিএ পড়াশোনা করতো। তার বড় ভাই ইসহাদ মাত্র তিন দিন আগে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য দেশে ফেরেন। কিন্তু আর তার ঈদ উদযাপন করা হলো না। দুই সন্তানকে হারিয়ে তাদের মা-বাবার জীবনের বাকী ঈদ গুলো আর সেভাবে উদযাপন করা হয়তো হবে না।

সাদমান এখন ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া। কতই হবে বয়স তার? এই অল্প বয়সেই অন্য দুজন মামাতো ভাইসহ সে না ফেরা দেশে পাড়ি দিয়েছে। নিহত সাদমানের বাবা আলমগীর চৌধুরীর মৃত্যুর পর সাদমান ও তার একমাত্র বোনকে নিয়েই তাদের মায়ের যে স্বপ্নটুকু ছিল, তা এই দূর্ঘটনায় চিরদিনের জন্য বিলীন হয়ে গেছে। স্বামীকে হারিয়েছেন আরো আগে, এখন একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে সেই মায়ের বুকে হাজারো শোকের স্রোত আছড়ে পড়ছে। রোববার সকালেও যে সন্তানের প্রাণোচ্ছল হাসি দেখেছেন তিনি, সন্ধায় সেই সাদমান কেবল একটি মৃতদেহ।