চট্টগ্রাম: বাজেটে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছেন ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজরা ভাস্কর ভট্টাচার্য্য।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ইপসা সীতাকুন্ড ফেডারেশন আয়োজিত ‘বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া’ অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সরকার প্রধান যতটা ইতিবাচক গুরুত্ব দিচ্ছেন অন্যরা বিষয়টি সেভাবে ভাবছেন না। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে প্রতিবন্ধীদের জন্য বেশি বেশি বরাদ্দ চাই। এবারের বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সতেরশ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু এর বড় একটা অংশ ব্যয় হবে ভাতায়। আট লাখ মানুষ ভাতা পাবে। আমরা দান-দয়ার বাজেট চাই না। সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও বাজেটে তার কোনো উল্লেথযোগ্য উদ্যোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, অন্যবারের তুলনায় বাজেট বেশি বরাদ্দ হলেও দেড় কোটি প্রতিবন্ধীর জন্য দৈনিক মাথা পিছু বরাদ্দ দুই টাকারও কম। এই অপ্রতুল বরাদ্দ দিয়ে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, চলাচল ও যোগাযোগ সহজীকরণ এবং অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা কিভাবে সম্ভব? ভুল জায়গায় প্রতিবন্ধীদের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিবন্ধীদের সক্ষমতা, প্রয়োজন, প্রবেশগম্যতা বুঝেই বরাদ্দ দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মো. হাসান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করেছি আমি। এখন চাকরির আবেদন করার পর অনেক জায়গায় পরীক্ষাই দিতে পারিনি। প্রাইভেট সেক্টর আমাদের চাকরির সুযোগ দিচ্ছে না। চাকরি না দিলে আমাদের লেখাপড়া কেন করাচ্ছেন? ৭০০ টাকা ভাতা দিয়ে আমি কী করব? কর্মসংস্থানের কোনো দিক নির্দেশনা বাজেটে নেই।
অনুষ্ঠানে বাজেটে পুনর্বিবেচনার জন্য ১০টি প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে আছে- প্রতিবন্ধীদের চাকরির কোটা (৫ শতাংশ) প্রয়োগ নিশ্চিত করা, প্রতিবন্ধী শিশুদের উপবৃত্তির সংখ্যা বাড়ানো, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও বরাদ্দ, প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্সের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা, ডিজিটাল সেবার প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা, গণ-পরিবহনে প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যবস্থা রাখা ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর গিয়াসউদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক এম নাসিরুল হক। ইপসার কর্মকর্তা সাদিয়া তাজিন ‘জাতীয় বাজেট ২০১৭-১৮: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।