মোর্শেদ নয়ন : পুলিশ প্রশাসন, রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক, জনপ্রতিনিধিদের সাথে দফায় দফায় মিটিং করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। সমন্বয় করছেন নানা কর্মপন্থা। চালু করেছেন ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনে দায়িত্ব বন্টন করে দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে। উদ্দেশ্য ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে জানমালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো।
শুধু তাই নয়; নিরাপদে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে ও তদারক করতে দিন-রাত ছুটে চলেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। যেখানে উপজেলার পারপাস বিল্ড আশ্রয় কেন্দ্র নেই, সেখানে সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করেন। সরেজমিন ঘুরে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ডাঙ্গারচরে কয়েকটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্টানেও মানুষের আশ্রয় নেয়ার ব্যবস্থা করেন। আশ্রয়প্রার্থী মানুষের জন্য করেন খাবারের ব্যবস্থা।
কর্মতৎপর এই মানুষটি হচ্ছেন নবগঠিত দেশের ৪৯০তম কর্ণফুলী উপজেলার সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মোঃ আহ্সান উদ্দিন মুরাদ। অথচ গত ২৯ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক কায্যক্রম শুরু করা কর্ণফুলী উপজেলার প্রথম দায়িত্বপ্রাপ্ত এই ইউএনও এখনো পাননি নিয়মমাফিক সরকারী কোন বরাদ্দ কিংবা সুযোগ-সুবিধা। নেই উপজেলা প্রশাসনের কোন নিজস্ব সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তিনি যে কর্ম-তৎপরতা ও আন্তরিকতা দেখিয়েছেন তাতেই অভিভূত হয়ে পড়েছেন কর্ণফুলীবাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করে কর্ণফুলীবাসী তাঁকে সিক্ত করছেন ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায়।
কর্ণফুলী উপজেলার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটি (সিপিপি) সদস্য জালাল উদ্দিন রোকন ইউএনও’কে উদ্দেশ্য করে বলেন- ‘মানবতার সেবায় উনার সার্বক্ষণিক তদারকি আমাদের মুগ্ধ করেছে।’
সানাউল রনি লিখেছেন- ‘কর্ণফুলীবাসী ইউএনও আহ্সান উদ্দিন মুরাদ এর হাত ধরে এগিয়ে যাবে বহুদূর, অচিরেই পরিণত হবে একটি মডেল উপজেলায়। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তার প্রতি।’
দিদারুল ইসলাম রাজু লিখেন- ‘অাজ অামাদের এলাকায় ইউএনও সাহেবের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি অামরা।’
আলমগীর আল জাবেদ নামের একজন লিখেছেন- ‘কর্ণফুলী উপজেলা হওয়াতে শুধু ত্রিমুখী শাসনের পতন নয়, তার চেয়ে বড় পাওয়া হল একজন অভিভাবকের জন্ম।’
নবগঠিত কর্ণফুলী উপজেলার প্রথম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া মোঃ আহ্সান উদ্দিন মুরাদ বলেন, ‘নতুন উপজেলা হওয়ার কারণে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। তারপরও সকলকে নিয়ে চেষ্টা করেছি ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সম্ভাব্য সবকিছু করতে। আমার দায়িত্ব পালনে সহযোগীতা করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ২৮ তম ব্যাচের কর্মকর্তা মোঃ আহ্সান উদ্দিন মুরাদ কক্সবাজারের চকরিয়ার সন্তান। বর্তমান কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তি নিয়ে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন তিনি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এ টু আই প্রোগ্রাম এবং নবগঠিত তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।