জসিম উদ্দিন, কক্সবাজার : কক্সবাজারে ইফতার পর্যন্ত প্রাণে না মারার আকুতি জানিয়েও নির্মমভাবে খুনের শিকার মোরশেদ আলী ওরফে মোরশেদ বলিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে হত্যার আগেই মামলা থেকে রেহাই পেতে পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে খুনিরা বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মোরশেদের স্বজনরা। যদিও অভিযুক্ত কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘর স্টেশনবাজারে ইফতারি কিনতে গেলে সেখানে
মোরশেদকে ঘিরে ধরে শত শত মানুষের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় মোরশেদ ইফতার পর্যন্ত তাকে প্রাণে না মারার আকুতি জানালেও মন গলেনি খুনিদের। উল্টো খুনিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাধারণ মানুষদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, উপরের নির্দেশে মোরশেদকে মেরে ফেলা হচ্ছে, তোমরা কেউ বাঁচাতে আসবে না।
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই জাহেদ আলী। মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ১৬ জনই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। এ ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচিত কক্সবাজারের ‘পাওয়ার আলির’ এক ভাইসহ এ পর্যন্ত তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি মনিরুল গিয়াস।
খুনের শিকার মোরশেদ ওরফে মোরশেদ বলি সদর থানার পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত মাস্টার ওমর আলির ছেলে।
এদিকে মোরশেদকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আলোচনায় এসেছেন দেশব্যাপী আলোচিত কক্সবাজারের ছৈয়দ মোহাম্মদ আলি ওরফে পাওয়ার আলি ওরফে আলি ভাইয়ের নামও।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা আলাল ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক জয়নাল আবেদীন হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত শত শত মানুষকে উদ্দেশ্য করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন— তোমরা মোরশেদ বলিকে বাঁচাতে কেউ আসবে না। তাকে মেরে ফেলার জন্য ওপরের নির্দেশ আছে।
ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গ সংগঠনের দুই তৃণমূল নেতা ‘ওপরের নির্দেশ’ প্রাপ্ত হয়ে একজন নিরীহ ব্যক্তিকে শত শত মানুষের সামনে পৈশাচিকভাবে হত্যার ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। পবিত্র রমজান মাসে একজন রোজাদার মানুষকে ইফতারি কেনার সময় প্রকাশ্য দিনের বেলায় এমন নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে।
আলোচিত এ মামলার ১নং সাক্ষী, বাংলাবাজারের বাসিন্দা আলি আহমেদ কোম্পানি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানা কন্ট্রাক্ট করে মোরশেদ আলিকে হত্যা করা হয়েছে। পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিমের হাতে পাওয়ার আলির ভাই মাহমদুল করিম ওরফে ওসি করিম ঘটনার আগে একটি কাজী অফিসে দুই দফায় এ টাকা তুলে দিয়েছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে প্রাণে না মারার শর্ত দেওয়া হয়েছিল, বলে আমরা জেনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোরশেদ আলিকে হত্যার জন্য যে ওপরের নির্দেশের কথা বলা হচ্ছে, তিনি হলেন পাওয়ার আলি। পিএমখালীর এবং কক্সবাজারের সবাই জানেন মোরশেদ হত্যায় জড়িত সবাই দখলবাজ, ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের সদস্য। আর তাদের মূল শক্তি ও গডফাদার হলেন পাওয়ার আলি। তার নির্দেশ ছাড়া পিএমখালীর গাছের পাতাও নড়ে না, এমন অবস্থা।’
আলি আহমেদ কোম্পানি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশ ও র্যাব উপস্থিত হয়ে যে তিনজনকে আটক করে তাদের মধ্যে পাওয়ার আলির ভাই দিদারও ছিল। তার দোকান থেকে মোরশেদকে হত্যার জন্য রাখা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় সিসিটিভি ফুটেজ। সেদিন দিদারকে ছেড়ে দিতে ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশের একজন অফিসারকে বারবার ফোন করেন পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন। কিন্তু পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কারণে দিদার শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হন। হত্যা মামলায় পাওয়ার আলির দুই ভাই মাহমদুল করিম ও দিদারুল আলমকে আসামি করা হয়েছে।’
একই অভিযোগ করেছেন, নিহত মোরশেদের চাচাতো ভাই আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই মোরশেদকে হত্যার আগে পাওয়ার আলির ভাই যিনি কক্সবাজার সদর থানা কন্ট্রোল করেন বলে আলোচনা আছে, সেই মাহমদুল করিমের সাথে খুনিদের বৈঠক হয়। মোরশেদকে হত্যার সময় থানা পুলিশ সামাল দেওয়ার জন্য মাহমুদুল হক থানায় বসে থাকবেন বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। আমরা যেন ঘটনার খবর না পাই সেজন্য মাহমুদুল করিম আমার এক ভাইয়ের সাথে ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ রাখেন। যখন জেনেছেন মোরশেদ মারা গেছে তখন থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।’
আবুল কালাম আরও বলেন, ‘খুনিরা মূলত ভূমিদস্যু, দখলবাজ সিন্ডিকেটের সদস্য। যার নেতৃত্ব দেন পাওয়ার আলির ভাই মাহমুদুল করিম। তাদের সাথে রয়েছে সদর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাদুল করিম মাদু। তাদের পেছনে পাওয়ার আলি রয়েছে এমন ধারণা থেকে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস করে না। কিন্তু মোরশেদ তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে, রুখে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোরশেদকে হত্যার শিকার হতে হয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক মেম্বার মোহাম্মদুল হকের সঙ্গে ঝগড়াকে কেন্দ্র করে। আর পুরো হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্বে।
স্থানীয়রা বলছেন, রাজনীতির আদর্শে বিভক্ত হলেও বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের পিএমখালী এলাকার নেতাকর্মীরা খুনোখুনিতে একাকার হয়ে পড়েছেন। তাও আবার হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য বিএনপি নেতা মোহাম্মদুল হকের দুই ভাই মোহাম্মদ আলী প্রকাশ মোহাম্মদ ও ছৈয়দুল হক সৌদি আরব থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাজারে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য যখন খুনির দল মোরশেদকে ঘিরে ধরেছিল, তখন রোজাদার মোরশেদ তাদের কাছে আকুতি জানিয়ে প্রাণভিক্ষা চেয়ে বলেছিলেন- আমি রোজাদার। আমাকে তোমরা মেরেই যখন ফেলবে তবে ইফতারটা করার সময় দাও।
মোরশেদ এক দশক ধরে পরিবার নিয়ে সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটানোর পর দুই বছর আগে গ্রামে ফিরেন। তিনি গ্রামে এসে মাছের ঘেরসহ ক্ষেত-খামার শুরু করেন। এলাকায় আসার পর থেকে পানি সেচ প্রকল্প নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক মেম্বার মোহাম্মদুল হকের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার সময় নিহত মোরশেদ বলী যখন চেরাংঘর স্টেশনের তরকারি দোকানের সামনে এসে কেনাকাটা করছিলেন তখনই আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফা আলাল এবং যুবলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন গলিটি ঘিরে লোকজনের আসা-যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়।
এসময় দুজনই সমস্বরে বলতে থাকেন-ওপরের নির্দেশ আছে মোরশেদ বলীকে মেরে ফেলার জন্য। এমন হুঁশিয়ারির সঙ্গে সঙ্গেই মামলার এক নম্বর আসামি আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক তার হাতের লম্বা কিরিচ নিয়ে প্রথমে মোরশেদের মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারে।
এরপর সৌদি আরব থেকে হত্যার মিশন নিয়ে আসা আসামি মোহাম্মদ আলী প্রকাশ মোহাম্মদ হাতুড়ি দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মোরশেদের অন্ডকোষে বারবার আঘাত করে। ঘটনার অন্যতম প্রধান নায়ক আসামি মোহাম্মদুল হক এ পর্যায়ে ধারাল কিরিচ দিয়ে মোরশেদের ডান হাতের কব্জিতে কোপ দিয়ে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
এরপর জাহাঙ্গীর আলম, মতিউল ইসলাম, ছৈয়দুল হক, হামিদুল হক, তাহেরুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও মেম্বার আরিফুল্লাহ, আক্কাস, শাহিন, খোরশেদ আলম, সৈয়দ মোহাম্মদ আলী প্রকাশ আলী ভাইয়ের ভাই মাহমুদুল করিম ও গ্রেফতার হওয়া দিদারুল আলম, আবদুল্লাহ, আবদুল আজিজ, আবদুল হাই, উমর ফারুক, ইয়াছিন, সাইফুল ইসলাম, ওসমান, আজহারুল ইসলাম ও জাহেদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা ছোরা, লোহার রড দিয়ে মোরশেদকে উপর্যুপরি আঘাতে আঘাতে ঝাঝরা করে ফেলে। এলাকার লোকজনের মতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু নিশ্চিত করে সংঘবদ্ধ খুনির দল এলাকা ছাড়ে।
নিহত মোরশেদ বলির ছোট ভাই ও মামলার বাদী শিক্ষানবিশ আইনজীবী জাহেদ আলী জানান, স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ১১ জনের একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এলাকাজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। তারাই আমাদের পরিবারের সেচ পাম্পটি দখলে নিয়ে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছিল। এমনকি সিন্ডিকেট সদস্যরাই এলাকায় করছিলেন ভূমিদস্যুতা থেকে যাবতীয় অপকর্ম।
তিনি বলেন, মোরশেদ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন। তিনি সিন্ডিকেটের অবৈধ কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়েই খুনের শিকার হলেন।
মামলার বাদী জাহেদ আলী জানান, সাবেক ইউপি মেম্বার ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদুল হক সেচ পাম্পটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তার চাচাতো ভাই এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সহ সভাপতি আবদুল মালেকের মাধ্যমে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে সিন্ডিকেটটি গঠনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সদর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাদুল করিম মাদু নিহত মোরশেদের জানাযার সময় খুনিদের আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করার কথা জানালেও উল্টো পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা আলালল ও পাওয়ার আলির ভাইদের মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর আওয়মী লীগের আহ্বায়ক মাদুল করিম মাদু বলেন, ‘মামলায় পাওয়ার আলির ভাই নিরীহ মাহমুদুল করিমসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করেছে তারা। যা অন্যায় হয়েছে। নিরীহ কাউকে আসামি না করলেও পারতেন তারা।’ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগ নেতাদের বহিষ্কার করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার কপি হাতে পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য
মোরশেদ হত্যাকাণ্ডের আগে দুই দফায় টাকা লেনদেন এবং থানা কন্ট্রাক্টের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটি অসত্য, বানোয়াট অভিযোগ।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি মামলায় সাক্ষ্য দিতে কক্সবাজারের বাইরে চলে এসেছিলাম। তারা হয়তো অভিযোগ করতে পারে, আপনারা সাংবাদিকরা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে পারেন।’
বর্তমান সময়ে থানায় ‘পাওয়ার আলির’ কোন প্রভাব দেখতে পাননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হয়তো তার ভাই মাহমদুল করিম কোন কারণে থানায় আসেন। কারণ থাকলে সবাই যেমন ওসি স্যারের কাছে যান, তেমনি আমার কাছেও আসেন। এর বাইরে তার সাথে আমার কেন ব্যক্তিগত সম্পর্ক নাই।’
অভিযোগের বিষয়ে সদর থানার ওসি মনীরুল গিয়াস বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে এ মুহূর্তে কিছু বলা উচিত হবে না, তবে পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন। সদর থানায় দালালদের প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে আরও অনেক আগেই। হয়তো পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সহজ, তাই অনেকে অভিযোগ করেন। আমার বিরুদ্ধে তো ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করেছিল একটি পক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ হচ্ছে খুনের সাথে জড়িতদের ধরে আইনের আওতায় আনা।’
কে এই পাওয়ার আলি
গত এক দশকে ‘পাওয়ার আলি’ উত্থান রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে। বাসার কাজের ছেলে থেকে এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। তার আসল নাম সৈয়দ মোহাম্মদ আলী। তবে ‘পাওয়ার আলী’ হিসেবে তিনি পরিচিত। কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের গোলারপাড়া গ্রামের নৌকার মাঝি ইলিয়াস প্রকাশ ওরফে কালু মাঝির ছেলে পাওয়ার আলী।
কক্সবাজারের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ব্যবসায়ী আলী গৃহকর্মী হিসেবে ১৯৯৪ সালে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
আলোচনা আছে, এখন আলীর ক্ষমতার প্রভাব এতই বেশি, কক্সবাজার প্রশাসনের শীর্ষকর্তা থেকে শুরু করে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারাও আর্শীবাদ পেতে নিয়মিত হাজিরা দেন তার দরবারে। জটিল কোন সমস্যায় আটকে গেলে জেলার শীর্ষ আমলা ও রাজনীতিবিদরা সাহায্যের জন্য আলীর কাছে ছুটে যান।
মোরশেদ বলিকে হত্যার নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আলি ওরফে পাওয়ার আলি বলেন, ‘এটি মিথ্যা কথা। আমার কোন ক্ষমতা নাই। পুলিশ, থানার সঙ্গে আমার পরিচয় নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই জানে আমার ভাই মাহমদুল করিম থানার দালালি করে, সে আমার কথা শুনে না। এ কারণে গত দুই বছর ধরে তার সাথে আমার সুসম্পর্ক নাই। মামলায় আমার দুই ভাই আসামি হয়েছে। আমি তাদের দায়ভার নেব না। পিএমখালীতে যা হয় তার দায় আমার ভাইয়েরা, যারা জড়িত তাদের। আমি কাউকে শেল্টার দিই না।’