সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

বিদ্যুতের পাচ্ছে ২৫ লাখ নতুন গ্রাহক

| প্রকাশিতঃ ৩১ মে ২০১৬ | ৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

powerঢাকা: ২৫ লাখ নতুন গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চায় সরকার। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ও পল্লী এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনে এই নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেয়া হবে। এতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হবে ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য ৪৬০ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৭৭১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন ৭৭টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (বাপবিবো) এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। একই সঙ্গে গ্রাহকের ঘরে স্থাপন করা হবে নতুন বৈদ্যুতিক মিটার।

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ৬৫ হাজার ট্রান্সফরমার, ২৫ লাখ মিটার ও ৭৫ হাজার ৬৫১ কিলোমিটার কন্ডক্টর কেনা হবে। বাপবিবো ২০১৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

বাপবিবো জানায়, বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে চাই। সরকারের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৪১ কিলোমিটার লাইনের মাধ্যমে ১ কোটি ৪২ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাপবিপো একটি ইন হাউজ সিকউরিটি স্টাডি সম্পন্ন করেছে।

স্টাডির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে কোনো বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ না করে শুধু মাত্র ট্রান্সফরমার স্থাপন করেই ২৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া সম্ভব।

এই প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, সপ্তম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৭০ লাখ নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পটি হাতে নেয়া হচ্ছে। ২৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে সামাজিক ও আর্থিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইতোমধেই ১৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর পরেই এই বড় প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি।’

প্রকল্প প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, ট্রান্সপটেশন অ্যান্ড ল্যান্ডিং চার্জ খাতে ৩৭ কোটি ৪৪ লাখ, ২৫ লাখ মিটার বাবদ সাড়ে ২৪ লাখ, সরবরাহ ও সেবা খাতে ৬৮ কোটি ২৪ লাখ, যানবাহন কেনা বাবদ ৮০ লাখ ও সিডি ভ্যাট বাবদ ৩৭৬ কোটি টাকা সংস্থান রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে হবে উন্নত দেশ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। ২০২১ সালে প্রয়োজন হবে ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে প্রয়োজন হবে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বাংলাদেশে ২০০৭ সালে ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। কিন্তু গ্যাসের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণে। বিদ্যুৎ, শিল্প, পরিবহন, বাণিজ্যিক, সার উৎপাদন, আবাসিক রান্নার কাজে গ্যাস প্রয়োজন। তাই পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী কয়লাকে প্রধান জ্বালানি রেখে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা হবে।

বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার ৩৫৮ মেগাওয়াট। এটা কয়েকগুণ বাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে সবাইকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে।