মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

চট্টগ্রামের উন্নয়নে শুধু কি বাবু-মহিউদ্দিনের অবদান?

প্রকাশিতঃ ১৬ মার্চ ২০২২ | ৫:৩৬ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম : রাঙ্গুনিয়ার পোমরায় স্থাপিত চট্টগ্রাম ওয়াসার শেখ হাসিনা পানি শোধানাগার প্রকল্প-২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কেবল আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকেই স্মরণ করেছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও অমিত সম্ভাবনার কথা বলতে গিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর অবদান অনস্বীকার্য। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান নেতারা চট্টগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। নেতাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আশা করেন।

এসময় চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু প্রান্তে মঞ্চে উপবিষ্ট তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রী হাছান মাহমুদ দুর্দিন-দুঃসময়ে সিপাহশালারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শেখ হাসিনার পাশে থেকে আওয়ামী লীগকে রক্ষায় নিরলস কাজ করে চলেছেন। নগরবাসীর সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের জন্য রাঙ্গুনিয়ায় পানি শোধানাগার স্থাপনে সহযোগিতা করায় তথ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। এসময় গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিটি মেয়র রেজাউল করিমকে জননন্দিত মেয়র উল্লেখ করে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি একজন সদক্ষ রাজনীতিবিদ, সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, ভদ্র মানুষ। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে চট্টগ্রাম আরও এগিয়ে যাবে।’

মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিশেষ করে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কেবল বাবু-মহিউদ্দিনের অবদান স্মরণ করায় উপস্থিত সচেতনজনদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কালো ছায়া দেখা যায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাধীন বাংলাদেশের চট্টগ্রামের প্রথম মন্ত্রী এই অঞ্চলের উন্নয়নের কাণ্ডারি জহুর আহমদ চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরীসহ প্রয়াত শীর্ষস্থানীয় বর্ষীয়ান নেতাদের সন্তান ও ভক্তদের মাঝে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন সাথে সাথেই ফিসফিস করে মন্তব্য করেন, ‘চট্টগ্রামের কাব্য লিখতে হলে বাবু-মহিউদ্দিনকে যেমন দরকার; তেমনি এম এ হান্নান, এম এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, এম এ মান্নান ছাড়া ‘চট্টগ্রাম কাব্য’ অসম্পূর্ণ, শ্রীহীন। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জীবন্ত কিংবদন্তি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের অবদান কি কম এই অঞ্চলের উন্নয়নে? চট্টগ্রামের শৌর্য-বীর্য, গৌরবগাথা লিখতে হলে অবশ্যই তাদের নাম আসবে সর্বাগ্রে। তাই সঙ্কটে, সম্ভাবনায় এখনো চট্টগ্রামবাসীর উচ্চারিত বাক্যাঞ্জলি– এই চট্টগ্রাম এম এ হান্নানের চট্টগ্রাম, এম এ আজিজের চট্টগ্রাম, জহুর আহমদ চৌধুরীর চট্টগ্রাম, এম এ মান্নানের চট্টগ্রাম।’

এমন গৌরবের চরিত্রগুলো মন্ত্রীর মুখে উচ্চারিত না হয়ে কেবল বাবু-মহিউদ্দিনের নাম উচ্চারণ হওয়ায় আরেকজন বললেন-‘মন্ত্রীর সে সময় কোথায়? অনেকের মতো মন্ত্রীও তেলেমাথায় তেল ঢালছেন। আমরা অনেকেই এখন অবস্থা আর অবস্থানমুখি। মন্ত্রী মহোদয়ও তার ব্যতিক্রম হবেন কেন? কারণ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে ভূমিমন্ত্রী, মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী। বাবাদের স্মরণ করলে অবস্থাপন্ন সন্তানদের খুশি হওয়ার একটা ব্যাপার থাকে! প্রয়াত বাকি চার বর্ষীয়ান নেতার সন্তানেরা তো তেমন কোনো পদ-পদবিতে নেই!’