সুনামগঞ্জ(জামালগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে পৌর এলাকার মল্লিকপুর খাদ্য গুদামঘাটে ত্রাণবাহী নৌকা ডুবে ৩৬০ বস্তা ভিজিএফর চাল নষ্ট হয়ে গেছে। ঝড়ের পর থেকে সারা জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ঝড়ের তাণ্ডবে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার নতুনপাড়া, হাসাননগর, কালিপুর, লালপুর, সোনাপুর, মল্লিকপুরসহ নয়টি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মল্লিকপুর খাদ্যগুদাম থেকে রঙ্গিয়ারচর ইউনিয়নে নেওয়ার জন্য ভিজিএফর চাল নৌকায় তোলা হয়েছিল। এ সময় ঝড়ে ত্রাণবাহী নৌকাটি ডুবে যায়।
এদিকে জামালগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে রাস্তার পাশের বড়বড় গাছ দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। অকাল বন্যার পর সুনামগঞ্জে এবার আঘাত হেনেছে কালবৈশাখী ঝড়। রোববার রাতের ওই ঝড়ে আট শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জ সদর ও আশপাশের উপজেলা সমুহ। উপড়ে পড়েছে শতাধিক গাছপালা। রাত ১১টার দিকে ওই ঝড় শুরু হয়। গত দুই সপ্তাহ ওই জেলায় পাহাড় থেকে আসা ঢলে অকাল বন্যা দেখা দেয়। ডুবে যায় সব হাওর। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা। এসব উপজেলার টিনশেড বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আধাপাকা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর, ঘোলঘর, নতুনপাড়া, নবীননগর, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, আরপিননগর, মোহাম্মপুর, মাইজবাড়ি এলাকার আড়াই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়। ভেঙে গেছে বাড়ির সীমানা প্রাচীর, উপড়ে পড়েছে গাছপালা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ , বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলায় ঝড়ের আঘাতে আরো দুই শতাধিক বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। ঝড়ে বসত ঘরের টিন কয়েকশ গজ দূরে গিয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ঝড়ে বিধ্বস্থ একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে, এতে বেশ কিছু বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। কিছুক্ষণ পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করব।’ ক্ষতিগ্রস্থদের উপযুক্ত সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান জানান, রাতের ঝড়ে তাঁর কার্যালয়ের বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। অন্য বাড়ির টিনের চাল এসে এসপির বাড়ির ভিতরে পড়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।