একুশে প্রতিবেদক : বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ চলছে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে। সেই জলবায়ু সম্মেলন অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (৩১ অক্টোবর) গ্লাসগোতে গেছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে।
দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনসহ কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের ব্যাপারে তাঁর মতামত বা সিদ্ধান্ত দেবেন। সবমিলিয়ে চলতি নভেম্বর মাসেই কমিটি গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে একুশে পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্যতম শীর্ষ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একুশে পত্রিকাকে বলেন, গত জুলাই মাসের শেষের দিকে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি খসড়া কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান, সম্প্রতি দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টিসহ নানা কারণ ও ব্যস্ততায় প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্রের পাঠানো কমিটি সংক্রান্ত ফাইলটি দেখতেই পারেননি। ধারণা করা হচ্ছে, জলবায়ু সম্মেলন থেকে ফেরার পর চলতি মাসের মধ্যেই কমিটি গঠনের বিষয়টি তিনি চূড়ান্ত করবেন।
কেন্দ্রীয় ওই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন পাঠানো কমিটিতে কাটছাঁট বা সংযোজন-বিয়োজন করবেন, নতুবা যে কমিটি পাঠানো হয়েছে সেটা আরও যাচাইবাছাই করে ঘোষণা দিয়ে দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিতে পারেন।
এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আওয়ামী লীগের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম উদ্দিনের উপর ছেড়ে দিতে পারেন। তবে সব ছাপিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণে বাহাউদ্দিন নাছিমই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন এটা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে দলের অভ্যন্তরে।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরেকটি শীর্ষ সূত্র একুশে পত্রিকাকে বলেছে, আপাতত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নামই ঘোষণা করা হবে। তারাই পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রটি বলছে, সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে বায়োডাটা জমা দিয়েছেন নগর রাজনীতির দুই বিববদমান বলয় আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলয় ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নগর সভাপতি ও চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত অন্তত ৭৫ জন। তাদের মধ্য থেকে রাজনৈতিক ত্যাগ-তিতিক্ষা আছে, নেতৃত্ব প্রদানে বলিষ্ঠ এমন ৮ জনের নাম সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক প্রোফাইলসহ।
এরা হলেন দেবাশীষ নাথ দেবু, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, আনোয়ারুল ইসলাম বাপ্পী, আজিজুর রহমান, আবুল হাসনাত বেলাল, মো. হেলাল উদ্দিন, সুজিত দাশ, আব্দুর রশিদ লোকমান।
এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রাপ্তির বিবেচনায় আছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এইচএম জিয়াউদ্দিন আহমেদের কমিটি কিংবা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে থাকা এমন কয়েকজনের নামও। এইচএম জিয়াউদ্দিনের অনুজ অ্যাডভোকেট তসলিম উদ্দিন, আজাদ খান অভি, শাহেদ আলী রানা ও সাদেক হোসেন পাপ্পু শীর্ষ পদে না আসলেও পেতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ পদ।
দীর্ঘ ২০ বছর পর গত ১৯ জুন (শনিবার) চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ভার্চুয়ালি চট্টগ্রাম মহাগনর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আড়ম্বরপূর্ণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে ২০০১ সালের জুলাই মাসে অ্যাডভোকেট এইচএম জিয়াউদ্দীনকে আহ্বায়ক ও কেবিএম শাহজাহান ও সালাউদ্দিন আহমদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
তবে গত ২০ বছরের অধিক সময়ে এখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেননি আহ্বায়ক কমিটির নেতারা। এমনকি ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়েও সব কমিটি ঘোষণা করতে পারেননি তারা। তবে সম্মেলন করে নতুন কমিটি দেওয়ার ঘোষণায় প্রাণ ফিরলেও কমিটি গঠনের বিলম্বতায় ফের শঙ্কা ও হতাশা বিরাজ করছে পদপ্রত্যাশীদের।