অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় নোমুরা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এনআরআই) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন চমকের সৃষ্টি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিগতভাবে সামনের ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে জাপানের কর্মক্ষেত্রে ৪৯ শতাংশ কাজ করে দেবে রোবট। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভবিষ্যতে অফিসের ক্লার্ক, ব্যাংক টেলার, নিরাপত্তাকর্মী, সুপারমার্কেটের দোকানদার, ট্রেন অপারেটর, বিভিন্ন খাবারের ডেলিভারি বয়, ক্লিনারসহ আরো অনেক সাধারণ কাজ রোবটদের দিয়েই করানো হতে পারে। খবরটি জানিয়েছে ভারতের আইটিবিষয়ক সাময়িকী পিসি কোয়েস্ট।
তবে সবকিছুই তো আর রোবট দিয়ে করা যাবে না। কিছু পেশা, যেমন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, চিত্রশিল্পী, সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, সমালোচক, আইনজীবী, শিক্ষক, আলোকচিত্রশিল্পী, টিভি সম্প্রচারকারক, লেখক এদের বিকল্প কখনোই রোবট হবে না বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। তবে মজার বিষয়, এনআরআই প্রতিবেদনে সাংবাদিকতা পেশা যে রোবটকে দিয়ে হবে না, সেটি কিন্তু উল্লেখ করা হয়নি। প্রযুক্তির যে অগ্রগতি হয়েছে আজকাল সেখানে যে রোবট, মানুষ সাংবাদিকের পদ দখল করবে না, সে কথা হলফ করে বলা যাচ্ছে না।
রোবট সাংবাদিকতা বিষয়টা শুনতে যতই কাল্পনিক লাগুক না কেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে এটি সামনের দিনে আমাদের জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠছে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) ওয়ার্ডস্মিথ সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কলেজভিত্তিক খেলাধুলার প্রতিবেদনগুলো নিজেই তৈরি করে। সফটওয়্যারটি তৈরি করেছে নর্থ ক্যারোলাইনার অটোমেটেড ইনসাইটস নামে একটি কোম্পানি। এই সফটওয়্যার তৈরিতে এপিও বিনিয়োগ করেছে।
বিশেষ অ্যালগরিদম বা কম্পিউটারের ভাষার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন তৈরি করে ওয়ার্ডস্মিথ সফটওয়্যার। একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন করপোরেট সংস্থার ত্রৈমাসিক আয়ের খতিয়ানের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি করা শুরু করে দিয়েছে এপি। এরই মধ্যে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস ঘোষণা করেছে যে তারা এ কাজে ওয়ার্ডস্মিথই ব্যবহার করবে। ফলে প্রতি তিন মাসে এরা চার হাজার ৪০০টি করপোরেট আয়ের রিপোর্ট নিয়ে প্রতিবেদন রচনায় সক্ষম হবে, যা একজন মানুষের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। শুধু এপি নয়, পশ্চিমা অনেক সংবাদ সংস্থা রোবট সাংবাদিকতা নিয়ে বেশ জোরেশোরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে। সংবাদ প্রতিবেদন ও মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় তথ্য স্থানান্তরের জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।