বাংলায় এসএমএস পাঠালে চার্জ অর্ধেক


ঢাকা : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মোবাইলে বাংলা এসএমএস বা ক্ষুদে বার্তা খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উদ্যোগে বাংলা এসএমএসের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়।

মন্ত্রী শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় বিটিআরসি মিলনায়তনে বিটিআরসি, অ্যামটব এবং মোবাইল অপারেটরদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধেক খরচে বাংলা এসএমএস উদ্বোধন করেন।

গ্রামীণফোন ও টেলিটকের গ্রাহকরা উদ্বোধনী দিন থেকেই এই সুবিধা পাবেন। রবি ১৫ মার্চ ও বাংলালিংকের গ্রাহকরা ৩১ মার্চ থেকে এই সুবিধার আওতায় আসবেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমানসহ বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে প্রতি এসএমএস পাঠাতে ৫০ পয়সা (ভ্যাট ও ট্যারিফ ছাড়া) খরচ হয়। বাংলা অক্ষরে লিখে পাঠালে তা ২৫ পয়সা (ভ্যাট ও ট্যারিফ ছাড়া) খরচ হবে। ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট থেকে প্রতি এসএমএসে খরচ ৫০ পয়সা (ভ্যাট ও ট্যারিফ ব্যতীত) নির্ধারিত ছিলো।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাভাষার জন্য রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠার পর আমাদের নৈতিক দায়িত্ব সর্বত্র বাংলা চালু করা। তিনি মোবাইলে বাংলা এসএমএসের মূল্য অর্ধেক করায় বিদেশি তিনটি মোইল কোম্পানির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তারা বাণিজ্যের প্রতি না তাকিয়ে বাংলার প্রতি তাকিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু এবং ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি অর্থাৎ দেশে প্রায় ১৭ কোটি মোবাইল সংযোগ রয়েছে। কেবল শিক্ষিত শ্রেণি মোবাইল ব্যবহার করে তেমনটিও নয়। তিনি সার্বজনীন বোধগম্য ভাষায় মোবাইল এসএমএসকে একটি কার্যকরী যোগাযোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকেও গ্রাহকদের জন্য পাঠানো এসএমএস বাংলায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের বাংলায় এসএমএস পাঠানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার মাতৃভাষা হিসেবে বাংলাকে পৃথিবীর চতুর্থতম মাতৃভাষা হিসেবে উল্লেক করে বলেন, পৃথিবীর ৩৫ কোটি মানুষের ভাষা হচ্ছে বাংলা। পৃথিবীর এমন কোনও দেশ নেই যেখানে বাংলা ভাষাভাষী মানুষ নেই।

হলহ্যাড নামে একজন ইংরেজ বৃটিশ শাসনামলে ফার্সির বদলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা এবং পরবর্তিতে ১৯১৮ সালে ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি করেছিলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেননি, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া সর্বত্র বাংলায় দাপ্তরিক যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা ছিলো কিন্তু আইক্যান ও ইউনিকোডের সঙ্গে সরকারের সুদৃঢ় উদ্যোগের ফলে আমরা তা অতিক্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছি।