হ্যাকার ধরতে এবার হ্যাকারদের পথেই হাটছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। হ্যাকারদের প্রকৃত অবস্থান জানতে ‘টর’ ব্রাউজার হ্যাক করার চেষ্টা করছে সংস্থাটি।
টর ব্রাউজার এমন একটি ব্রাউজার যেটি ব্যবহারকারীর প্রকৃত অবস্থান লুকিয়ে রাখে। আর তাই হ্যাকারদের প্রকৃত অবস্থান জানতে ব্রাউজারটি হ্যাক করতে কিছুটা উদ্ভট উপায়ে এগোচ্ছে এফবিআই।
টর ব্রাউজারের মূল ডেভেলপারদের একজনের বিরুদ্ধে আদালতে হাজির করার পরোয়ানা জারী করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি। হ্যকিংয়ের এক মামালার তদন্ত করতে আইসিস এ্যাগোরা লাভক্রাফট নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা আনা হয় বলে, জানিয়েছে সিএনএন।
এদিকে এফবিআইয়ের এমন পদক্ষেপে ভীতি প্রকাশ করেছেন লাভক্রাফট। আর সে কারণেই বিষয়টি নিয়ে এফবিআই তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে জার্মানীতে চলে যান। তার ধারণা এফবিআই তাকে দিয়ে ‘টর’ হ্যক করিয়ে বিশ্বব্যাপী এর গ্রাহকদের উপর নজরদারী করবে। এর ফলে অনেক নির্দোষ গ্রাহকের ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাভক্রাফট বলেন, “আমি চিন্তিত ছিলাম যে, তারা আমকে এমন কিছু করতে বলবে যেটি নির্দোষ মানুষের ক্ষতির কারণ হবে এবং মানুষকে সেটি সম্পর্কে জানানো হবে না।”
এই তদন্ত বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি এফবিআই। যদিও এই মামলার সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আটলান্টা এবং লস এঞ্জেলেসের এফবিআই কর্মকর্তারা লাভক্রাফটকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তাদের ধারণা এফবিআই যে মামলাটি তদন্ত করছে সেটির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
লাভক্রাফটের বিষয়টি বিবেচনা করে মুক্ত ইন্টারনেট বিষয়ক তহবিল ইলেক্ট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনের আইনজীবী নেট কারডোজো বলেন, “তার প্রাথমিক লক্ষ্য হল, সে যাতে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসতে পারে এবং তাকে চলে যাওয়ার জন্য কোনো হুমকি দেওয়া হয়েছে কিনা সেটি খুঁজে বের করা।”
‘টর’ যেহেতু গ্রাহকের প্রকৃত অবস্থান লুকিয়ে রাখে তাই হ্যাকার, মাদক পাচারকারী এবং শিশু পর্নোগ্রাফারদের কাছে এটি অনেক জনপ্রিয় ব্রাউজার। আর লাভক্রাফট এমন ব্যক্তি যিনি এই ব্রাউজারের ভেতরের তথ্য জানেন। এজন্য ব্রাউজেরর তথ্য বের করতে তাকেই লক্ষ্য করেছে এফবিআই।
এক্ষেত্রে এফবিআইকে কোনো সহায়তা করতে রাজি হননি ওই ডেভেলপার। “আমরা মানুষের অধিকার রক্ষা করতে যেসব কাজ করি, এর মাধ্যমে সেই অধিকার খুন্ন হবে। যেসব নারী জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গবেষণা করেন তাদের গোপনীয়তা দরকার যেটি টর তাদেরকে দিয়ে থাকে। আমি সেটা ভাঙতে পারিনা।”, বলেন লাভক্রাফট।
যুক্তরাষ্ট্রে ফেরা নিয়েও তাই ভীতি কাজ করছে তার মনে। তিনি বলেন, “আমি জানিনা তারা কি চায়। আমি জানিনা আমি ফিরে গেলে আমার কি হবে।”