কাউন্সিলর ফোরামের নেতাদের দেখা দিলেন না ‘ব্যস্ত’ প্রশাসক সুজন!


চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নবনিযুক্ত প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের সাক্ষাৎ পাননি চট্টগ্রাম এক্স কাউন্সিলর ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম নাজিম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন।

ব্যস্ততার অজুহাতে এই দুই নেতাকে সাক্ষাৎ না দিলেও তাদের সঙ্গে যাওয়া খাতুনগঞ্জ ট্রেড এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগির আহমেদকে ভেতরের রূদ্ধদ্বার কক্ষে ডেকে নিয়ে যান প্রশাসক এবং আন্তরিকভাবে কথা বলেন। অন্যদিকে দেড়ঘণ্টা অপেক্ষা করেও প্রশাসকের সাক্ষাৎ না পেয়ে মনখারাপ করে ফিরে যান এক্স কাউন্সিলর ফোরামের দুই নেতা।

বুধবার (১২ আগস্ট) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে সিটি করপোরেশনের টাইগারপাসস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে। এই ঘটনা জানাজানি হলে কাউন্সিলর ফোরামের অন্য সদস্যদের মাঝে অসন্তোষ ও মনোকষ্ট তৈরি হয়।

কাউন্সিলর ফোরামের সিনিয়র সদস্য তিন তিনবারের সাবেক এক কাউন্সিলর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৃহস্পতিবার দুপুরে একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশাসক যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন অন্তত এক মিনিটের জন্য ওই দুই কাউন্সিলরকে দেখা দিতে পারতেন এবং বুঝিয়ে বলতেন যে, এখন ব্যস্ত আছেন, পরে সময়-সুযোগ করে কথা বলবেন।’

সুজন ভাই তো আমলা থেকে প্রশাসক হননি, মাঠে-ঘাটে বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে গণমুখী রাজনীতি করে প্রশাসক হয়েছেন। কাজেই এমন আচরণ তার চরিত্রের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেন ওই কাউন্সিলর।

এক্স কাউন্সিলর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় খাতুনগঞ্জ ট্রেড এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছগির ভাই, মোহরা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আমাদের সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম নাজিম উদ্দিন প্রশাসক মহোদয়ের সাথে দেখা করতে করপোরেশনে যাই। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দুই-তিন মিনিটের জন্য দেখা করে পরবর্তীতে প্রশাসকের সুবিধামতো সময়ে কাউন্সিলর ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়ের একটি শিডিউল নেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু দেড়ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ মিলেনি আমাদের। আমরা তিনজন একসাথে দেখা করার জন্য ভেতরে খবর পাঠালেও প্রশাসক কেবল ছগির ভাইকেই ডেকে পাঠান। দেখা করে এসে ছগির ভাই জানান, তিনিও নাকি আমাদেরকে কয়েক মিনিট সময় দেওয়ার অনুরোধ করেন, কিন্তু প্রশাসক রাজি হননি।’

এক্স কাউন্সিলর ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম নাজিম উদ্দিন একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন যাই তখন প্রশাসক মহোদয় বাইরে ছিলেন। ওই সময় আমরা আনোয়ার সাহেবের কক্ষে অবস্থান করি। তিনি আমাদের যথেষ্ট সম্মান করে চা-নাশতাও খাওয়ান। এরপর প্রশাসক বাইরে থেকে ফিরে এলে আমরা তিনজন (ছগির, জামালসহ) তাঁর একান্ত সচিব আবুল হাশেমের কক্ষে যাই। তিনি প্রশাসক মহোদয়ের কক্ষে আমরা দেখা করতে চাই মর্মে ম্যাসেজ পাঠান।’

‘কিছুক্ষণের মধ্যে ছগির ভাইকে ভেতরে ডেকে নিয়ে যাওয়া হলেও আমাদের সাথে দেখা করেননি। একান্ত সচিব জানান, দায়িত্ব নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রশাসক মহোদয়। সে কারণে আগামি ২০ আগস্টের পরই সাধারণের সাথে সাক্ষাৎ দিতে চান তিনি।’

‘কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যস্ততার জন্য আমরা দুইজনকে সাক্ষাৎ দিতে পারেননি ঠিক আছে, মানলাম। কিন্তু ছগির সাহেবকে সাক্ষাৎ দিলেন কীভাবে?’ বলেন এক্স কাউন্সিলর ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম নাজিম উদ্দিন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন একুশে পত্রিকাকে বলেন, “না, এরা আমার অফিসে আসেনি, ছগির আহমদকে আমি ডেকেছিলাম, তার এলাকার পানির সমস্যা নিয়ে। এ কাউন্সিলরা বিএনপি করে তাই এসব বলতেছে।”

পরক্ষণে সুজন বলেন, “তারা আসবে বলেই কি আমার দেখা করতে হবে। আমি ২০ আগস্টের আগে কারো সাথে দেখা করবো না। দেখা করলে কথা বলতে হবে, সময় দিতে হবে।”