রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

‘শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বসের বিচার হবে’

| প্রকাশিতঃ ১৭ মে ২০১৬ | ৩:৩৯ অপরাহ্ন

anusul law ministerনারায়ণগঞ্জে একজন হিন্দু স্কুল শিক্ষককে স্থানীয় এমপির উপস্থিতিতে কান ধরে ওঠ-বস করানোর ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি পেতে হবে- বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আইনমন্ত্রী বলেন, শিক্ষককে কান-ধরে ওঠ-বস করানো অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। এবং পেনাল কোড ঠিক মতো ঘাঁটলে এটি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এ মন্তব্য করেছেন বলে জানাচ্ছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

আইনমন্ত্রী হুশিয়ারি দেন যে কারণেই ঘটনা ঘটুক, আইন হাতে তুলে নেয়া বরদাশত করা হবে না।

এর আগে গতকাল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন ঐ ঘটনার তদন্ত করা হবে।

শনিবার নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে স্থানীয় এমপির উপস্থিতিতে কান ধরে ওঠ-বস করানো হয়।
এরপর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।

এদিকে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের নামে অর্থ গ্রহণ, স্কুলে অনুপস্থিতি ও দেরি করে আসার কারণ দেখিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বরখাস্তের চিঠিটি পেয়েছেন। চারটি সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে সোমবার (১৬) বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (ম্যানেজিং কমিটি) সভাপতি ফারুকুল ইসলামের স্বাক্ষর করা ওই চিঠিতে বরখাস্তের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে শ্যামল কান্তি ভক্তকে উদ্দেশ করে লেখা হয়েছে, আপনার বিরুদ্ধে আনিত নিম্ন বর্ণিত অভিযোগসমূহ অদ্যকার পিয়ার সাত্তার লতিফ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভায় উত্থাপিত হয়।
১। আপনি ছাত্রদের উপর শারীরিক নির্যাতন করেন।
২। বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চাকুরী দেওয়ার নাম করে অর্থ গ্রহণ করেছেন।
৩। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
৪। বিদ্যালয়ের ছুটি ব্যতিরেকে অনুপস্থিত থাকেন এবং প্রায়ই দেরি করে বিদ্যালয়ে আসেন।

পূর্বেও এসব অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে এবং আপনাকে বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু আপনি এরূপ অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত হননি। তাই ১৩ মে ম্যানেজিং কমিটির সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাকে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’

এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরখাস্ত করার চিঠি পাওয়ার পরও প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি কাছে দাবি করে বলেন, ‘এসবের কোনোটাই সত্য না। এসব কিছুর পক্ষে ছিলাম না বলেই আজ এতো আপমান অপদস্ত হতে হয়েছে।’