রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

৫০ মণের ‘বিশু’, ৪২ মণের ‘টাইগার’ নিয়ে বিপাকে বিক্রেতারা

| প্রকাশিতঃ ১০ অগাস্ট ২০১৯ | ৮:৩১ অপরাহ্ন

প্রবীর সাহা (পাবনা) : পাবনায় কোরবানীর জন্য উৎপাদিত ফিজিয়াম জাতের বিশালাকৃতির গরু শেষ সময়েও বিক্রি না হওয়ায় হতাশায় খামারীরা। বেশি দাম হওয়ায় মিলছে না ক্রেতা।

পাবনার সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে মোল্লা খামারের মালিক আব্দুল ওয়াদুদ সবুজ জানান, প্রায় ৩ বছর আগে ব্র্যাকের ১০০% হলেসটাইন ফিজিয়াম জাতের গরুর জাত থেকে এদের  উৎপাদন। বৃহস্পতিবারে তার জন্ম হওয়ায় আমার মা তার নাম রাখে বিশু। ৫০ মণ ওজনের এই গরুটির দাম আমি সাড়ে ১৩ লাখ টাকা চেয়েছি। আশানুরূপ দাম এখনও কেউ বলেনি। তবে এই বিশালাকৃতির গরুটি বিক্রি করা আমার খুব প্রয়োজন। এছাড়া আমার খামারে ছোট বড় ষাঁড়, গাভীসহ প্রায় ২৬টি গরু রয়েছে।

জেলার চাটমোহর উপজেলার ছোট গুয়াখড়া গ্রামের খামারী মিনারুল বলেন, দেড় বছর আগে আমার এক প্রতিবেশী বন্ধুর ১৫/১৬ মন ওজনের গরু কিনে দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের খামারে এই প্রথমবারের মতো গরু মোটাতাজাকরণ শুরু করি। তখন তার নাম রাখা হয় টাইগার। ৪২ মণ এই গরুটির দাম আমি ২৫ লাখ টাকা চেয়েছি। বর্তমানে আমি গরুটি নিজ জেলায় বিক্রি করতে না পেরে ঢাকার মোহাম্মদপুর কোরবানীর পশুর হাটে তুলেছি। এখন পর্যন্ত এই গরুটি নেয়ার মতো কেউ দাম বলে নাই। যে দাম বলছে তা আশানুরূপ হচ্ছে না। তাই অপেক্ষা করছি।

পাবনার সুজানগরের পৌর এলাকার ভবানীপুর (প্রফেসর পাড়া) ক্ষুদ্র গরু ব্যবসায়ী ও খামারী আনোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, আমার নিজ খামারের প্রায় ২ বছর ৭ মাস আগে ‘ফিজিয়াম’ (অস্ট্রোলিয়া) জাতের এই গরুটা জন্ম নেয়। শখ করে বড় করে ওর নাম দিয়েছিলাম ‘বাহাদুর’। ২২ মণ ওজনের গরুর দাম চাচ্ছি ১১ লাখ টাকা। এই দামে গরু বিক্রি করতে পারলে ক্রেতাকে খুশি হয়ে বিশেষ উপহার দিতে চেয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত গরুটি বিক্রি করতে পারিনি।

পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আল মামুন হোসেন জানান, পাবনা জেলায় এবারের কোরবানীর উদ্দেশ্যে ২০ হাজার ৬৭৩ খামারী গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ মিলিয়ে ২ লাখ ১৮ হাজার পশু প্রস্তুত করেছিলো। এসব পশু জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন তারা। এই পশুগুলো খামারিরা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করেছিলো। এ পদ্ধতিতে কোনোভাবে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বা ওষুধ প্রয়োগ করা হয়নি।

এদিকে খামারীরা জানান, দেশীয় পদ্ধতি খৈল, ভুষি, খড়, ঘাস খাইয়ে গরু মোটাতাজা করলে অনেক খরচ হয়। আর এই বিশালাকৃতির গরু খামারে রাখলে খরচও অনেক। যদি এসব গরু আশানুরূপ দামে বিক্রি করতে না পেরে খামারে ফিরিয়ে নিয়ে যাই তবে খামারের খরচ বেড়ে যাবে আরও কয়েকগুণ। আর বিশালাকৃতির গরু উৎপাদন করতেও নিরুৎসাহিত হবে খামারীরা।