চট্টগ্রাম : নগরের জলাশয়-জলাধার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে কিনে নেবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। বৃহস্প্রতিবার (১৮ অক্টোবর) সিডিএ’র সম্মেলন কক্ষে নগর উন্নয়ন কমিটির সভায় এই কথা জানান চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম।
মাস্টার প্ল্যান এবং ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে নগরে যেসব জলাধার-পুকুরের অস্তিত্ব আছে সেগুলো জনস্বার্থে সংরক্ষণের জন্য কিনে নেবেন বলে জানান সিডিএ চেয়ারম্যান।
ইতোমধ্যে কয়েকটি জলাধার কিনে নেয়া হয়েছে জানিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘জলাধার কেনার জন্য সরকার থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা প্রকল্প পেয়েছে সিডিএ। এ ধরনের প্রকল্প এই প্রথম। এই টাকায় জলাধার-জলাশয় এবং পুকুর সংরক্ষণের পাশাপাশি খেলার মাঠও সংরক্ষণের ইচ্ছা আছে। পুকুর বা জলাধারের যে মৌজা মূল্য, তার চেয়ে বেশি মূল্যে এসব কিনে নেয়া হবে। এছাড়া খালের পাশে যে সব নিচু জমি (লো ল্যান্ড) বাজারমূল্য কম থাকায় বিক্রি হয় না সেসব জমিও কিনবে সিডিএ। বলেন সিডিএ চেয়ারম্যান।
সিডিএ নগর উন্নয়ন কমিটির এই সভায় সভাপতিত্ব করেন চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম। অন্যান্যের মধ্যে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন, নগর উন্নয়ন কমিটির সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু, সিডিএ’র উপপ্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহীন উল ইসলাম খান, চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (কারিগরী) সেলিনা আকতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নগরের ১১ দশমিক ০৪ একরের ভেলুয়ার দিঘী সংরক্ষণ করে পর্যটন-উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার ব্যাপারে আলোচনা করেন নগর উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জলাশয়-জলাধার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও সিডিএ নগর উন্নয়ন কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু একুশে পত্রিকাকে বলেন, এ উদ্যোগ আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল। ২০০০ সাল থেকে পুকুর-জলাশয়-জলাধার ভরাট এবং নদীর দখল-দুষণের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। শিশুদের সাঁতারের মাধ্যমে সুস্থ দেহ, সুস্থ মানস গঠনের পাশাপাশি ব্যবহারের পানি, অগ্নিনির্বাপণের প্রয়োজনে আমরা জলাশয়-জলাধার সংরক্ষণের কথা বার বলে আসছি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বহুবার মৌখিক এবং লিখিতভাবে প্রস্তাব দিয়েছি। হাজার হাজার মানুষ নিয়ে মানববন্ধন করে আমরা ভেলুয়ার দিঘী ভরাট প্রতিরোধ করেছি। ভালো লাগছে, চট্টগ্রাম নগরের জলাশয়-জলাধার, পুকুর সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে সিডিএ।
চট্টগ্রাম পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী প্রফেসর মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, ‘জলাধার এবং পুকুর ভরাট আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। জমির উচ্চ মূল্যের কারণে আড়ালে আবডালে সংশ্লিষ্ট মালিকপক্ষ এসব ভরাটের মাধ্যমে বহুতল ভবন নির্মাণ করে লাভবান হতে চায়। এক্ষেত্রে তারা বাধার সম্মুখীন হয় এবং এমনকি মামলা-দণ্ডের মুখোমুখিও হয়। যারা অবৈধভাবে জলাধার-পুকুর ভরাট করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে চায় তাদের জন্য সিডিএ’র এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহ আশা জাগানিয়া এবং সুখের বিষয়।’
একুশে/এটি