রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

জীবন একটাই, সম্পর্কের সমীকরণটাকে বর্ণিল করুন

| প্রকাশিতঃ ২ অগাস্ট ২০১৬ | ১০:৪১ পূর্বাহ্ন

relationসৈয়েদা ফাতেমা পিংকী : আপনি নিজেও বুঝতে পারেন না যে আপনি কতোখানি ভালো আছেন। স্বাচ্ছন্দ্য সবসময় বয়ে যায় না জীবনে। তার মানে এই নয় যে আপনি খারাপ রয়েছেন…

অভাবী তো কম-বেশি আমরা সবাই-ই। পূর্ণ নই কেউ। অভাবে থেকেও মুখের হাসি অমলিন রাখাই জীবন। সবসময়ের জন্যে এ কথাটি সত্য যে আপনি যতোখানি কষ্টে আছেন এর চেয়েও বেশি কষ্টে কেউ না কেউ রয়েছেই…। নিজেকে নিজের সুখকর ও তৃপ্তিদায়ক বিষয়গুলির সঙ্গে বারেবারে মেলাতে চেষ্টা করুন, সন্তুষ্টি আসবে এতে।

এবং আপনি জানবেন যে আপনি একা নন। একাকিত্বকে প্রশ্রয় দেবেন না। এর ভোগান্তি মারাত্মক… আর সে একাকি-বিলাস যদি হয় সঙ্গী পাশে থাকা সত্ত্বেও তবে তার ফল আরো আত্মঘাতি। তাই খুশি থাকুন দু’জনে দু’জনকে নিয়ে। এর কোনো বিকল্প নেই। মুহুর্ত্বের ছোট্ট ছোট্ট আবেশে দু’জনে কল্পনাতীত সুখে থাকা যায়… একটু মনোযোগ দিন- দেখুন সেগুলিকে- যেগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে চোখ এড়িয়ে যায় আপনার…

আপনাদের দু’জনের সম্পর্কটি আকাশের মতো। একে ব্যালকনির এক পাশের টুকরো মেঘ হতে দেবেন না। জানবেন আপনারা দু’জন একসাথে রয়েছেন। সুতরাং এই-ই সর্বোচ্চ ভালো থাকা… আপনি জীবনে কী/কাকে পেতে পারতেন তা আজ আর বিবেচ্য নয়… বরং সত্য এটাই যে বাস্তবটা আপনার সামনে এখন বিবদমান। ’জীবন’ কোনো অলীক বিষয় নয় তাই কল্পনাবিলাসী বা অতি বাস্তববাদী হলে হোঁচটটা খেতে হবে আপনাকেই….
কর্তব্য শুধু নয়;
কৌশলপরায়ণ হোন দু’জনেই…

আপনার সঙ্গীনি যখন হাত পুড়িয়ে রেঁধে আপনাকে খাওয়ায়; তখন লবণ একটু কম হলেও সেটা নাহয় নাই-ই বললেন তাকে…! নাহয় এভাবেই বললেন যে আপনি লবণ কমই খান এবং লবণ কম খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো। রান্না অপছন্দ হয়নি ভেবে তিনি যে হাসিটি মিষ্টি করে তখন হেসে দেবেন- ওটুকু দিয়েই নাহয় আলুনি ভাবটা সামলে নিন…।

আপনারা আগে যতোক্ষণ সময় ঘরের বাইরে একসাথে কাটাতেন হয়তো তা কিছু না কিছু খেতে খেতেই বেশ কাটতো… এখনও যখন আইসক্রিমের দোকানটির সামনে দিয়ে হেঁটে যাবেন- দুটো আইসক্রিম কিনে বারবার অদলবদল করে খেতে খেতে গল্প করতে ইচ্ছে করবে ভীষণ… কিন্তু বিলাসিতা করা যে মানা! এখনও তাই সঙ্গীর করা ‘আইসক্রিম খাবে?? চলো খাই…’-এর উত্তরে ‘আমার না একটুও আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করছে না…” সঙ্গীনির বলাই কর্তব্য… দেখবেন এতেই, এটুকুতেই মনের একটুখানি জমে উঠতে থাকা খেদ মুহূর্ত্বে মিলিয়ে গিয়েছে…

আপনার সঙ্গী যখন শখ করে অনেক কষ্টে বাঁচানো অল্প কিছু টাকা দিয়ে কিনবে কি কিনবে না– এই ভাবতে ভাবতে আপনার জন্যে একখানা গাঁঢ় নীলরঙা শাড়ী কিনেই ফেলবে- কেবল এই ভেবে যেন সেই রাতের জোছনাটুকু আরো প্রেমাতুর হয়- সেই শাড়ী হাতে নিয়ে খুশিতে আপনার চোখে জল এমনিতেই আসা উচিৎ… হতে পারে মনে মনে অন্য কোনো রঙ চাইছিলেন আপনি- তবু ঐ মুহুর্ত্ব থেকে আপনার মনে গেঁথে নিন যে নীল ছাড়া পৃথিবী তে এমন আর কোনো রঙ নেই যাতে আপনাকে মানায়; এমন কোনো রঙ নেই যা আপনাকে আপনার সঙ্গীর চোখে অপরূপা করে তুলতে পারে…

দু’জনই যার যার নিজের চাহিদা কমিয়ে ফেলুন ; নজর দিন একে অপরের চাহিদায়… দেখবেন স্বপ্নগুলি কতো যত্নে, কতো ভালোবাসায় সত্যি হতে শুরু করেছে এক এ এক এ…..

সম্পর্ককে ধূসর হতে দিতে নেই কখনও….. জীবনের যেটুকু রঙ মুছে যায়নি এখনও তাই দিয়েই স্বপ্নের পুরোটা দেওয়াল রাঙাতে হয়, সম্পর্কের সমীকরণটাকে করতে হয় বর্ণিল…
সৈয়েদা ফাতেমা পিংকী : ১ম বর্ষ, সমাজকর্ম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।