মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

ওয়াসার পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু নেই : প্রকৌশলী ফজলুল্লাহ

প্রকাশিতঃ ৩ মে ২০১৮ | ৬:২৮ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরসহ কিছু এলাকায় পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধির জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসাকে দায়ী করার প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সেবা সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ দাবি করেন, তাদের সরবরাহ করা পানিতে কোন ক্ষতিকর জীবাণু নেই।

এই দাবির পাশাপাশি নানা যুক্তি ও পানির নমুনা ‘পরীক্ষার ফল’ তুলে ধরেন ওয়াসার শীর্ষ এই কর্মকর্তা।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, নগরের রামপুর ওয়ার্ডের ঈদগাঁ বউবাজার, পাশ্ববর্তী উত্তর আগ্রাবাদের রঙ্গিপাড়া, শান্তিবাগ এবং হালিশহর আই ব্লক এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ি, রাস্তার কল এবং বস্তি থেকে সংগৃহীত পানির নমুনাতে কোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া (জীবাণু) পাওয়া যায়নি।

‘তবে সরাইপাড়া এলাকার একটি বাড়ির ওভারহেড পানির ট্যাংক থেকে সংগৃহীত পানির নমুনায় জীবাণু পাওয়া গেছে। তাই বাসাবাড়ির নিজস্ব ওভারহেড ও আন্ডারগ্রাউন্ড পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দেয়া হবে।’

তিনি আরো বলেন, পানি পরিশোধন ও সরবরাহ পর্যায়ে বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে পানির গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। মোহরা ও শেখ হাসিনা পানি শোধনাগারে অবস্থিত ওয়াসার পরীক্ষাগারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী পানির সকল ধরনের গুণাগুণ পরীক্ষা করা হয়।

‘পানি শোধনাগারের ভেতরে সর্বশেষ ধাপে ক্লোরিন গ্যাস প্রয়েগের মাধ্যমে পানিতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়াসহ অন্য সকল জীবাণুর বিনাশ নিশ্চিত করা হয়। এরপর পানি নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। গ্রাহকদের বাসায় পৌঁছা পর্যন্ত যে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য পানিতে বিশেষ মাত্রায় ক্লোরিনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।’ যোগ করেন ওয়াসা এমডি।

তিনি বলেন, ‘পানি শোধনাগারের ভেতরে পানির কিছু গুনাগুন প্রতি ঘন্টায়, কিছু গুনাগুন ৪ ঘন্টা অন্তর, কিছু গুনাগুন দৈনিক এবং কিছু গুনাগুন সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।’

প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘এ ছাড়া প্রতিমাসে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে ৯০টি পানির নমুনা সংগ্রহ করে মোহরাস্থ ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা হয় এবং ফলাফল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এভাবে সংগৃহিত পানির নমুনাতে কোন ধরনের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।’

‘সর্বশেষ গত ১ মে রামপুর ওয়ার্ডের ঈদগাহ বউবাজার, উত্তর আগ্রাবাদের রঙ্গিপাড়া, শান্তিবাগ ও হালিশহর আই ব্লকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় কোন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ওয়াসার এমডিকে জানান, হালিশহরে আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুলে ওয়াসার সরবরাহ করা পানি ব্যবহার করে অনেকেই অসুস্থ হয়েছেন। তখন এমডি বলেন, ‘আর্টিলারির অভ্যন্তরে কোন সমস্যার কারণে পানি দূষিত হয়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) গোলাম হোসেন, কমার্শিয়াল ম্যানেজার ড. পিযূষ দত্ত, সচিব শামীম সোহেল, প্রধান প্রকৌশলী জহুরুল হক, চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য তপন চক্রবর্তীসহ ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা।

এসআর/একুশে