সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

চোখে এসিড নিক্ষেপ, ৮ জনের কারাদণ্ড

প্রকাশিতঃ ২৬ এপ্রিল ২০১৮ | ৪:৫৫ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম : ২৭ বছর আগে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহানের দুই ছেলের চোখে খেজুর কাঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে এসিড নিক্ষেপের চাঞ্চল্যকর মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে ২ জনকে ১০ বছর, ৬ জনকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৮ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বৃহষ্পতিবার (২৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামের ৫ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ স্বজন কুমার সরকার এ রায় প্রদান করেন।

আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহানের দুই সন্তান কবির আহমদ ও সবুর আহমদের উপর চোখে খেজুর কাটা ও এসিড ঢেলে নৃশংস নির্যাতন চালায় রাঙ্গুনিয়ায় দুর্ধর্ষ আইয়ুব বাহিনী; এই বাহিনীর প্রধান আইয়ুব যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদেরের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত।

বিচার চেয়ে মামলা করায় ওই বছরের ৩০ অক্টোবর যাত্রীবাহী জীপ গাড়ী থেকে মুক্তিযোদ্ধা সোবহানকে ধরে নিয়ে যায় আইয়ুব বাহিনী। ১২ দিন পর দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হাত পা গলা কাটা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায় মুক্তিযোদ্ধা সোবহানের। মুক্তিযোদ্ধা সোবহান খুনের মামলায় ২১জন আসামীর মধ্যে সন্ত্রাসী আইয়ুবসহ ১৭জনের যাবজ্জীন সাজা হয়। তবে সোবহানের দু’সন্তানের চোখ উৎপাটন করে এসিড দেওয়ার মামলা দুই যুগের বেশী সময় ধরে ঝুলে আছে।

এ ঘটনায় আইয়ুব বাহিনীর আইয়ুবসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ১৯৯৩ সালের ১৬ আগস্ট বিচার শুরু করে আদালত। অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন- আবুল হাশেম, আবদুল হক, আবদুল ছালাম, জাহাঙ্গীর, ইব্রাহীম, সোলেমান, গোলাম কাদের, রশিদ আহমদ, মকবুল হোসেন, জাফর, তছলিম, আবুল হাসেম। এসিড দগ্ধ মুক্তিযোদ্ধার দুই সন্তানকে পাঁচ বছর বিভিন্ন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়।

এরপরও তাদের উন্নতি না হওয়ায় লন্ডনে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগীতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ ২৭ বছর ধরে এ মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন এসিড দগ্ধ ভুক্তভোগী কবির ও সবুরের ভাই বাদী ফরিদুল আলম।

ফরিদুল আলম বলেন, আমার দুই ভাইয়ের উপর নির্যাতনের বিচার চাইতে গিয়ে খুন হন আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা। আমাকেও অপহরণ করে আইয়ুব বাহিনী। পরে আইনশৃংখলা বাহিনী উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাও বিচারাধীন আছে। প্রাণ ভয়ে আজ ২৭ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার নিজ গ্রামে যেতে পারি না আমরা।

একুশে/এসআর/এএ