চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী লালদিঘী ময়দানে জব্বারের বলী খেলার ১০৯ তম আসরের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বলী খেলাকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে হাজারো মৌসুমী ব্যবসায়ী। তারা হরেক রকমের পণ্যের পসরা বসিয়েছে।
মঙ্গলবার মেলার প্রথম দিন উপচে পড়া ভীড় ছিল ক্রেতাদের। তবে উৎসবের মুল আকর্ষণ ‘বলী খেলা’ অনুষ্টিত হবে আজ বুধবার বিকেলে।
জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা আয়োজক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। এবারের উৎসব সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’
বলী খেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘি ও আশপাশের প্রায় তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অন্যরকম এক আবহ। আন্দরকিল্লা মোড় থেকে কোতোয়ালী মোড়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে জেল রোড সব জায়গায় উৎসকে কেন্দ্র করে আসা ‘মৌসুমী’ ব্যবসায়ীদের দখলে।
বাদ যায়নি কোর্ট রোড, লয়েল রোড, পুরনো গির্জা, কেসি দে রোডসহ আশপাশের সব এলাকাও। রাস্তা, ফুটপাত, আইল্যান্ডসহ সব জায়গায় বসেছে নানা পণ্যের পসরা।
বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতপাখা, শীতল পাটি, বাঁশি, হস্তশিল্প, বেতের ফার্নিচার, মৃৎশিল্প, মাটির কলস, চুড়ি, ফিতা, রঙিন সুতা, হাতের কাঁকন, নাকের নোলক, মাটির ব্যাংক, ঝাড়ু, খেলনা, ঢোল, শিশুদের নানা ধরনের খেলনা, বাহারি চুড়ি, গৃহস্থালী সামগ্রী, প্লাস্টিক সামগ্রী, কুটির শিল্প, মুড়ি-মুড়কিসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ চারাসহ সব ধরনের সামগ্রী নিয়ে জড়ো হয়েছে বিক্রেতারা।
বলী খেলা ও বৈশাখী মেলাকে ঘিরে লালদিঘী ময়দানে নাগরদোলা, সার্কাস ও বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
নগর পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্র জানায়, বলী খেলা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২৪০ জন পুলিশ সদস্য লালদিঘীর আশপাশে মোতায়েন থাকছে।
প্রসঙ্গত ভারত বর্ষের স্বাধীন নবাব টিপু সুলতানের শাসন অবসানের পর ভারতীয় উপমহাদেশে বৃটিশ শাসনামল শুরু হয়। বাঙালি সংস্কৃতি বিকাশ ও বাঙালি যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব তৈরি করতে এগিয়ে আসেন বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার সওদাগর।
বাংলা বর্ষের ১২ বৈশাখ ১৩১৬ বঙ্গাব্দ, ১৯০৯ সালে আব্দুল জব্বার সওদাগর বলী খেলার আয়োজন করেন। পরে এ প্রতিযোগিতা ‘জব্বারের বলী খেলা’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
এসআর/একুশে