শফিক আহমেদ সাজীব : চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের কথা উল্লেখ করলে অনেকেরই মনে পড়বে মহাপ্রাচীরের কথা। আবার অনেকেই ভাববেন নিষিদ্ধ নগর বা ফরবিডেন সিটির কথা। বহুদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল দেখার। সময়, সাধ্য কোনটাই ছিল না। দেশের খ্যাতনামা সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক লায়ন হাকিম আলীর আন্তরিকতায় ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডের চীন সফরে আমি টেলিভিশন সংবাদকর্মী হিসেবে সফরসঙ্গী হয়ে চীন দেশে যাবার সুযোগ হলো। সৌভাগ্য হলো ইতিহাস সমৃদ্ধ বিশ্বখ্যাত নিষিদ্ধ এই নগরী বা রাজপ্রাসাদ জাদুঘর দেখার।
হ্যাঁ, বেইজিংয়ের কেন্দ্রীয় অঞ্চল থিয়েনআনমেন মহাচত্ত্বরের ঠিক উত্তরে সুমহান প্রাচীন স্থাপত্যের সংগ্রহশালা আছে। বিশ্বখ্যাত নিষিদ্ধ নগর (ফরবিডন সিটি) বা রাজপ্রাসাদ জাদুঘর। বেইজিংয়ের রাজপ্রাসাদ জাদুঘর হলো চীনের প্রাচীন প্রাসাদ স্থাপত্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। উপরন্তু এটি বর্তমানে পৃথিবীর সংরক্ষিত সবচেয়ে বড় আকার, সম্পূর্ণ একটি প্রাচীন কাঠের তৈরি স্থাপত্য। ১৯৮৭ সালে নিষিদ্ধ নগরকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শুধু তাই নয়, ইউনেস্কো একে সংরক্ষিত প্রাচীন কাঠের কাঠামোর বৃহত্তম সংগ্রহ হিসাবে তালিকাভুক্ত করে।
নিষিদ্ধ নগরী ছিল চীনের রাজপ্রাসাদ, যা মিং রাজবংশের আমলে তৈরি হয়। এটি চীনের বেইজিং শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। বর্তমানে এটি প্রাসাদ জাদুঘর। ১৫ বছর ধরে দশ লাখেরও বেশি শ্রমিক প্রাসাদ নির্মাণের কাজ করেন। নিষিদ্ধ নগরের আকার এতো বিশাল, শৈলী এতো সুন্দর, স্থাপত্য এত সুমহান এবং আসবাবপত্র এত বিলাসী যা পৃথিবীতে খুব কম দেখা যায়। এর আয়তন ৭ লাখ ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি। উত্তর-দক্ষিণে দৈর্ঘ্য প্রায় এক হাজার মিটার, পূর্ব-পশ্চিম দিকে প্রস্থ প্রায় আটশ’ মিটার। চার দিকে দশ মিটারেরও বেশী উঁচু দেয়াল আছে।
দেয়ালের বাইরে চারদিক ঘিরে ৫০ মিটার চওড়া আয়তাকার জলাধার রয়েছে। প্রায় ৫০০ বছর ধরে, এটি সম্রাট এবং তাদের পরিবারের পাশাপাশি চীন সরকারের আনুষ্ঠানিক এবং রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। সম্রাটের অনুমতি ছাড়া এ এলাকায় কেউ প্রবেশ করতে বা এলাকা ত্যাগ করতে পারতো না বলে এর নাম ফরবিডেন সিটি বা নিষিদ্ধ নগর হয়েছিলো। ইউয়ান রাজবংশের সময় এখানে প্রথম রাজকীয় নগর গড়ে ওঠে।
লেখক: শফিক আহমেদ সাজীব, সভাপতি- চট্টগ্রাম টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ও সাধারণ সম্পাদক- নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি।