ঢাকা : বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার। এই খসড়ায় বিদ্যমান আইনের অন্তত ৯টি বিতর্কিত ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত হচ্ছে বেশ কয়েকটি ধারা, যার মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাকমেইলিং (প্রতারণা) এবং অশ্লীল বিষয়বস্তু প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড।
উপদেষ্টা পরিষদের আগামী বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়া আলোচনায় উঠবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
নতুন আইনের খসড়াটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাকস্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার মতো তেমন কোনো ধারা নেই। বর্তমান আইনে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিদ্বেষ-বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণায় শাস্তির বিধান রয়েছে। সংজ্ঞাগত অস্পষ্টতার কারণে সাধারণ বক্তব্যের জন্যও মামলা করা সম্ভব হতো এবং এর ফলে অনেক মানুষকে কারাগারে থাকতে হয়েছে। এই ধারাগুলো নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কোন কোন ধারা বাদ যাচ্ছে?
* কম্পিউটার সোর্স কোড পরিবর্তন সংক্রান্ত অপরাধ (ধারা ২০)
* মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা (ধারা ২১)
* পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ (ধারা ২৪)
* আক্রমণাত্মক, মিথ্যা তথ্য প্রচার (ধারা ২৫)
* অনুমতি ব্যতীত তথ্য সংগ্রহ (ধারা ২৬)
* মানহানিকর তথ্য প্রকাশ (ধারা ২৯)
* আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো (ধারা ৩১)
* হ্যাকিং (ধারা ৩২)
* মহাপরিচালকের ক্ষমতা অর্পণ (ধারা ৫৫)
নতুন ব্যবস্থা:
* যে কারও মামলা করার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।
* সরাসরি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি, তার প্রতিনিধি অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলা করতে পারবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী জানিয়েছেন, খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদের আগামী বৈঠকে আলোচনার জন্য উঠবে।
উল্লেখ্য, ব্যাপক সমালোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ বাতিল করে গত বছর সেপ্টেম্বরে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ পাস করে আওয়ামী লীগ সরকার। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে এবার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আনা হচ্ছে।