সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

পুলিশ সেজে ফেসবুক-প্রতারণা, মূলহোতা কর্ণফুলীর আতাউর

প্রকাশিতঃ ৬ নভেম্বর ২০১৭ | ২:৩৯ অপরাহ্ন

মোর্শেদ নয়ন : কখনো হজ্বে পাঠানোর নামে, কখনো বা চাকরি দেয়ার নামে ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় মানুষের সাথে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া আতাউর রহমান চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার খোয়াজনগরের বাসিন্দা । কিন্তু দেশের সীমানা পেরিয়ে প্রবাসে গিয়েও থামেনি তার প্রতারণা। বরং প্রবাসে নিরাপদে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সাবেক পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডলের নামে ফেইসবুক আইডি খুলে নতুন করে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। কয়েক মাসে তার চক্র হাতিয়ে নেয় বিপুল পরিমাণ টাকা।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সাবেক পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডলের নামে ফেইসবুক আইডি খুলে প্রতারণার অভিযোগে গোয়েন্দা পুলিশ ফেনীর দাগনভূঁঞা এলাকা থেকে শনিবার রাতে মো. রনি নামের এক যুবককে গ্রেফতার করলে প্রতারক আতাউর চক্রের পরিচয় প্রকাশ পায়।

জানা যায়, আতাউর রহমান চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার খোয়াজনগরের মাইকবিহীন ইবাদত মতাদর্শের আধ্যাত্মিক পীর হাফেজ মুহাম্মদ ইয়াছিনের ছেলে। সে বিভিন্ন পস্থায় মানুষের সাথে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বছর দুয়েক আগে কাতারে পাড়ি জমান। এ কারণে তাকে তার পিতামাতা ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) আসিফ মহিউদ্দিন বলেন, ‘কখনো মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ, কখনো চাকরি দেয়া কিংবা মোটর সাইকেল বিক্রির কথা বলে মানুষকে বোকা বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে টাকা হারিয়েছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও। পুলিশের কাছে আসা প্রতারণার অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।’

তরুণ এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল স্যারের নামে কাতার থেকে ভুয়া ফেইসবুক আইডি চালান আতাউর। রনি তার হয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করত। এলাকায় রনির একটি মোবাইল ফোনের দোকান আছে। মোবাইল ফোনে সাবেক পুলিশ কমিশনার জলিল মন্ডল স্যারের মতো করে কথা বলতে পারেন আতাউর। ভুয়া ফেইসবুক আইডি খুলে সে বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তাকে রিকোয়েস্ট পাঠাতেন এবং কথা বলতেন। আইডিতে আব্দুল জলিল মন্ডলের বিভিন্ন ছবির পাশাপাশি ফ্রেন্ড লিস্টে বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার ছবি দেখে সহজে প্রতারিত হতেন সাধারণ লোকজন।’

উল্লেখ্য, আব্দুল জলিল মন্ডল ২০১৬ সালে সিএমপি থেকে বদলির পর র‌্যাব সদর দফতরে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি অবসরে গেছেন। সিএমপিতে যোগ দিয়ে বিলবোর্ড এবং ভাসমান হকার উচ্ছেদ, নগরীতে নিজে ঝাড়ু হাতে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মতো ব্যতিক্রমী কাজ করে মানুষের নজর কেড়েছিলেন জলিল মন্ডল।