চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম-পানগাঁও নৌ-রুটে পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহণ ব্যয় সাশ্রয়ী করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক জানান, গত ১ ও ১৫ সেপ্টেম্বর জাহাজ মালিকসহ আমদানি ও রফতানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নানা উদ্যেগ নিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনরিুজ্জামান। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম রুটে জাহাজের বিদ্যমান ভাড়া কমাতে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি বাতিলের উদ্যোগ। এতে নদীপথে কনটেইনার পরিবহনে খরচ কমবে।
এরই মধ্যে চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম নৌ-রুটে নিয়মিত জাহাজ পরিচালনা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আইজিএম এবং বি/এল-এ কনটেইনারের গন্তব্যস্থল হিসেবে পানগাঁও টার্মিনালের নাম উল্লেখ করে এলসি খোলার বিষয়ে আমদানি-রফতানিকারকরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। কাস্টমস জটিলতা নিরসনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ায় পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালে শুল্কায়ন কার্যক্রম সহজ করা হয়েছে।
আর্ন্তজাতিক কনটেইনার অপারটের সিএমএ-সিজিএম (CMA-CGM)সহ অন্যান্য শিপিং লাইন্স নদীপথে কনটেইনার পরিবহণের জন্য পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ব্যবহারে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পানগাঁও আইসিটির জন্য পূর্ব নির্ধারিত একটি জেটির পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও একটি জেটি পানগাঁও আইসিটিগামী জাহাজের জন্য বরাদ্দ করছে। এতে আগের তুলনায় তুলনায় দ্বিগুণ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যকে ব্যয় সাশ্রয়ী হিসেবে গড়ে তুলতে এবং আমদানি-রফতানি সহজ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বিআইডব্লিউটিএ’র যৌথ উদ্যেগে কেরানীগঞ্জে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম নৌ-রুটে আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহণ চালু আছে।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও বন্যা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট হয়। বন্দরের জট কাটাতে পানগাঁওয়ে আমদানি পণ্য খালাসের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত ২৭ আগস্ট থেকে সব আমদানি-রফতানিকারককে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল এবং চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম নৌপথযোগে আমদানি-রফতানির ধারা বজায় রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় নৌপথে আগ্রহ হারায় ব্যবসায়ীরা।
বন্দর কর্তৃপক্ষের নেওয়া নানা উদ্যোগের ফলে নৌপথে পণ্য পরিবহণ আবার গতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।