চট্টগ্রাম: চিত্রনায়ক সালমান শাহ অস্বাভাবিক মুত্যু নিয়ে একগাদা প্রশ্ন রেখেছেন মা নীলা চৌধুরী। শনিবার সালমান শাহ ‘হত্যার’ প্রতিবাদ ও অবিলম্বে বিচারের দাবিতে সালমান শাহ ঐক্যজোট, চট্টগ্রাম এই সমাবেশের আয়োজন করে। চট্টগ্রামের মুসলিম হলে এই আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নীলা চৌধুরী।
সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে মা নীলা চৌধুরী বলেন, সালমান শাহ’র মৃত্যু পর তার শোকে ৪১জন মানুষ মারা গেছে বলে আমি শুনেছি। কেউই বিশ্বাস করে না সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছে, শুধু সামিরা (সালমানের স্ত্রী) ছাড়া। সালমান শাহ যেদিন মারা গেল সেদিন থেকে সে আত্মহত্যা করেছে এটা রটাতে হত্যাকারীরা নিজেরাই পকেটে পকেটে চিরকুট বিলি করেছে কেন।
তিনি বলেন, তারা রশিতে ঝুলালো। আসলে তো রশিতে ঝুলানো হয়নি। ফ্যানটা ফ্যানের জায়গায় রয়ে গেছে। ওই ফ্যানটা আজও একই অবস্থায় আছে। রশিটা সোজা কাটানো থেকে গেছে। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গোসল করিয়ে গায়ে তেল মাখিয়ে দেয়, যাতে গলায় বসানো ফিংগার প্রিন্ট নষ্ট হয়ে যায়।
নীলা চৌধুরী বলেন, সালমানকে হসপিটালে নেওয়া হলো। কোনো ডাক্তার দেখলো না কেন। কোনো ডেড সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি কেন। ময়নাতদন্তও ঠিক মতো করা হয়নি। সুরতহাল প্রতিবেদনও ভুল তথ্য রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা অনেক টাকা খেয়েছেন। সামিরাদের সঙ্গে মিলে আত্মহত্যা হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়েছেন। আজ তারা ২২ বছর ধরে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, সালমান শাহর হত্যা নিয়ে সবার মধ্যে ক্ষোভ আছে, দুঃখ আছে, প্রশ্ন আছে। আজ প্রমাণিত হচ্ছে সালমান-শাহকে হত্যা করা হয়েছে। যা ভিডিও ভাইরালের মাধ্যমে সামিরার মামি রুবি সুলতানা বার বার বলে যাচ্ছে। তার স্বামী, ভাই, পুত্রসহ সবাই এ হত্যায় জড়িত ছিল। যার ফলশ্রুতিতে রুবির ভাই রুমীকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে এবং রুবির সন্তান বিকিকে দিয়ে হত্যার আলামত সামিরা পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে ফেলে দিয়ে নষ্ট করেছে। রুবি বার বার বলছে, নীলাভাবি আমাকে যদি মেরেও ফেলা হয়, তারপরও আপনি মামলা বন্ধ করবেন না, সালমান-শাহ আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নীলা চৌধুরী বলেন, এর আগেও একজন খুনি রিজভী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছে, রুবির মতো সে-ও খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কীভাবে সালমান-শাহকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে কোর্টে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে রেকর্ড করা আছে। বিগত দিনে ডিবি, সিআইডি জুডিশিয়ারি ইনকোয়ারি করে বিভিন্নভাবে মামলাটিকে যথেষ্ট এড়িয়ে দিয়ে ও মামলাটিকে প্রহসনের সৃষ্টি করে আত্মহত্যার প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটি শেষ করার চেষ্টা করেছেন, যা আমি কোনোদিনই মেনে নিইনি। তাই আজও মামলাটি চলছে। পিপি আবদুল্লাহ আড়াই বছর কালক্ষেপণ করেছেন। আমি তার বিচার দাবি করছি।
সালমানের শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নীলা চৌধুরী বলেন, নাসিরাবাদের আপন নিবাসে সালমানকে খুনের চেষ্টার পরও তিনি কেন মামলা করেননি! সালমানকে যেদিন মেরে ফেলা হলো সেদিন তিনি কেন বিমানে ঢাকায় যাননি!
এছাড়া বক্তব্য দেন সালমান শাহ ঐক্যজোট, চট্টগ্রামের সভাপতি তানভির সায়েম, সাধারণ সম্পাদক সালমান হায়দার, অরিন্দম চক্রবর্তী, আরিফ জয়, লোকমান হোসেন প্রমুখ।