চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীতে ড্রাম কেটে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় যুবলীগ ক্যাডার অমিত মুহুরীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে; ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী অমিত মুহুরী নগরের সিআরবির জোড়া খুনের মামলার আসামি। চট্টগ্রামে বহু সন্ত্রাসের জন্ম দেয়া এই সন্ত্রাসী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত।
এদিকে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় পৃথক অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুমিল্লার নাঙ্গলকোর্ট উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার হুমায়ুন কবির মজুমদারের ছেলে মো. ইমাম হোসেন মজুমদার ওরফে শিশির (২৭) ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ভোরবাজার এলাকার মৃত আশরাফ মিয়ার ছেলে মো. শফিকুর রহমান ওরফে শফি (৪৬)।
গত ১৩ আগস্ট দুপুরে এনায়েত বাজার মোড়ের রানীর দিঘীতে ভাসতে থাকা ড্রামটি উদ্ধারের করে পুলিশ। অর্ধেক কাটা ড্রামটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা ছিল। পরে ঢালাই কেটে একটি গলিত লাশ পাওয়া যায়। ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পারে, নিহত যুবক হলেন রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মো. রেজাউল করিমের ছেলে ইমরানুল করিম ইমন (২৫)।
এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতারের পর আমরা চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। তারা আমাদেরকে নিহতের পরিচয় জানিয়েছে। এমনকি কেন, কিভাবে হত্যা করা হয়েছে সেসব তথ্যও দিয়েছে।
তিনি বলেন, খুনের শিকার ইমন ছিল অমিতের বন্ধু। স্ত্রীর সাথে ইমনের পরকিয়া সম্পর্ক আছে- এমন সন্দেহে অমিত এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী ইমনকে নন্দনকাননের নিজের বাসায় ডেকে নেয় অমিত মুহুরী। এরপর গ্রেফতার দুইজনের সহায়তায় ইমনকে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ৯ আগস্ট ভোর ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরবর্তীতে লাশ গুম ও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি অর্ধ ড্রামে ইমনের লাশ ভরে চুন ও এসিড ঢেলে ড্রামের উপরে সিমেন্ট বালু দিয়ে ঢালাই করে দেয়। এরপর সেটি বাসার মধ্যে রেখে দেয় এবং পরবর্র্তীতে ভ্যান গাড়ী যোগে ১২ আগস্ট গভীর রাতে রানীর দিঘীর পাড়ে ড্রামে ভর্তি অবস্থায় লাশ ফেলে দেয়।
ঘটনার আরও রহস্য উদঘাটন ও তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম।