রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশিতঃ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১:২৯ অপরাহ্ন


রায়হান আহমেদ তপাদার : একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সংকট বাংলাদেশের রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাগোষ্ঠী বহু দিন ধরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতার মুখোমুখি হয়ে আসছে, যার ফলে তারা বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় চেয়েছে, যা দেশের সম্পদ এবং অবকাঠামোর ওপর একটি বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে। এই নিবন্ধটিতে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টাকে সহজতর করার জন্য পরাশক্তির ভূমিকার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রোহিঙ্গা সংকটটি আলোচনা করা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর সম্পৃক্ততা একটি উল্লেখযোগ্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে কৌশলগত অবস্থান ও সম্পদের কারণে রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। একটি প্রধান বৈশ্বিক শক্তি এবং মিয়ানমারের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা এবং কৌশলগত স্বার্থ চীনের প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে। অনেক সময় চীন মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক চাপ থেকে রক্ষা করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভেটোর ক্ষমতা প্রয়োগ করার মাধ্যমে মিয়ানমারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপনসূচক রেজল্যুশন পাস হতে বাধা প্রদান করছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, চীনের কাছে এই সমস্যার সমাধানের চেয়ে মিয়ানমারে বিনিয়োগ করা এবং আঞ্চলিক প্রভাব বজায় রাখা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র বারবার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নৃশংসতার জন্য দায়ী মিয়ানমারের প্রধান সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তা ছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উল্লেখযোগ্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে আসছে।

তবে মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক অগ্রাধিকারের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার কার্যকারিতা সীমিত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সক্রিয়ভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা, মানবিক সহায়তা প্রদান এবং জবাবদিহির পক্ষে কথা বলছে। ইইউ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার প্রমাণ নথিভুক্ত করার উদ্যোগকে সমর্থন করছে। কিন্তু মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জটিল রাজনৈতিক গতিশীলতার কারণে প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা।

যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা সহজতর করতে এবং একটি স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সংলাপ এগিয়ে নিতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত আঞ্চলিক উদ্যোগকে সমর্থন করা এবং আসিয়ানের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করার মাধ্যমে তার সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি ব্যাপক ও সমন্বিত পদ্ধতির পক্ষে ওকালতি করা এবং প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা, মানবাধিকার এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের গুরুত্বের ওপর জোর দেয়া।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা মূলত কয়েক দশক ধরে পদ্ধতিগত বৈষম্য ও নিপীড়নের সম্মুখীন হয়ে আসছে। চলাফেরার স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়ে নাগরিকত্ব এবং অপরিহার্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রোহিঙ্গারা মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, যৌন সহিংসতা এবং অগ্নিসংযোগের মতো নৃশংসতা।

২০১৭ সালের আগস্টে সামরিক দমন-পীড়নের প্রতিক্রিয়ায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমন বাংলাদেশের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে। কক্সবাজারে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরগুলো ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যেখানে যথাযথ স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সুবিধার অভাব রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সামাজিক কাঠামোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বিধায় সে সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট একটি মানবিক ও মানবাধিকার ইস্যু, যা রাজনীতি ও ক্ষমতার গতিশীলতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। ইস্যুটিকে ঘিরে অন্তর্নিহিত রাজনীতি সমাধান প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলেছে এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগে অবদান রেখেছে।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর সম্পৃক্ততা একটি উল্লেখযোগ্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে রাখাইনে প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ এবং পরিস্থিতি কোনোটাই নেই। ছয় বছর আগে ফেলে আসা তাদের জন্মভূমিতে সেনা ব্যারাক, পুলিশ ফাঁড়ি, সীমান্ত চৌকিসহ নানা অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। মংডুতে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য যে ‘মডেল ভিলেজ’ নির্মাণ করা হচ্ছে, তাতে থাকতে রোহিঙ্গারা রাজি হবে না।

সবচেয়ে বড় কথা, নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা না পেলে কোনো রোহিঙ্গাই রাখাইনে ফিরতে রাজি নয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়ে গেছে। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয় শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে আট লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে রাখাইন রাজ্য থেকে। রোহিঙ্গা ঢলের এ ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্বের দাবি জানালেও প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে আপাতত নাগরিকত্ব দেয়া হবে না। এনভিসি কার্ডে তাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে। মিয়ানমারের এমন শর্তে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনে আগ্রহী হবে এমন সম্ভাবনা কম। তবে মিয়ানমারের মংডু শহর পরিদর্শনকালে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি দেখা গেছে। সেখানে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা, ব্যবসা করা মানুষের ৮০ শতাংশই দেখা গেছে রোহিঙ্গাদের। সেখানে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। বস্তুত রোহিঙ্গারা নিজ জন্মভূমি রাখাইনে পুনর্বাসন প্রত্যাশা করছেন। না হলে তারা ফিরতে আগ্রহী নয়, এ রকম মনোভাব কি আদৌ সমস্যার সমাধান করবে?

মিয়ানমারের সরকারের কারণে যেখানে রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। সেখানে চীনের চাপে পড়ে হলেও আবার মিয়ানমারে ফেরত নিতে চাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে উভয় পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে বিষয়টি কি এ রকম নয়? এমন পরিস্থিতিতে পরিপূর্ণ সন্তুষ্টির বিষয়টা প্রকৃতপক্ষে আপেক্ষিক। যে সমস্যা এত দিনেও সমাধান হচ্ছে না, তা খুব সামান্য সময়ে যে সম্ভব হবে সেটা নয়। এ ক্ষেত্রে প্রত্যাবাসন শুরুর ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে ছাড় দেয়াটা প্রয়োজন। আবার এ প্রত্যাবাসন যেন আগের মতো রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে না দেয়া হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।

মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া হলেও রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুরুর দিকে যে পরিমাণ বিদেশি সাহায্য এসেছিল, তার পরিমাণও কমে গেছে। এদিকে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ হলেও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তারা ক্যাম্পের বাইরে এসে ভুয়া এনআইডি, ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আটক হয়। ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের ঘটনাও ঘটে। মূলত রোহিঙ্গারা যে এ দেশে আশ্রিত সেটি তাদের জীবনাচরণে ফুটে ওঠে না। আবার তাদের মূল স্রোতে মিশে যেতে দেয়াও সম্ভব নয়।

সে হিসেবে রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক পুনর্বাসনই আমাদের কাম্য। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়, এটি একতরফাভাবে বলা যাচ্ছে না। আবার রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে ছাড় দেয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসেবে ১ হাজার ১৭৬ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে প্রকৃতপক্ষে আসলে আস্থার সংকটটি এ ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। কেননা ২০১৮ সালে মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা দিয়েছিল বাংলাদেশ। সে তালিকা যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার। তাই মিয়ানমার সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতেই পারে। এ ক্ষেত্রে তার পরও সীমিত সংখ্যক হলেও যে পরিমাণ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার সরকার ফেরত নিতে চাচ্ছে, কূটনৈতিকভাবে এ আন্তরিকতাকে অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই।

এর পরও যেহেতু বিশালসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে থেকে যাবে, সে হিসেবে পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে বাকিদের ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক তৎপরতা বজায় রাখতে হবে। সে জন্য প্রথম ধাপে অন্তত এ ‘পাইলট প্রকল্প’ যেন সফল হয় সেজন্য সব পক্ষের আন্তরিক উদ্যোগ জরুরি। বাংলাদেশের চলমান কূটনৈতিক উদ্যোগের কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সঙ্গে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী ও শক্তিধর দেশগুলো জড়িত। আমেরিকা, জাপান, কানাডা, ইইউর পাশাপাশি চীনের ভূমিকাও সারা বিশ্বে সুবিদিত। চীন এশিয়া ভূখণ্ডে নতুন কূটনৈতিক সাফল্যের পথে হাঁটছে। এর ধারাবাহিকতায় চীন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে ভূমিকা রাখলে বিশ্ব পরিমণ্ডলে চীনের সফলতা জাজ্বল্যমান হবে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সামরিক ও কৌশলগত বিষয়ে চীনের ভূমিকা স্বীকৃতি পাবে।

প্রত্যাবাসন-সংক্রান্ত চুক্তিকে কার্যকর এবং প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ করার জন্য প্রয়োজনে তা পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মাধ্যমে সমন্বয় করা যেতে পারে। দীর্ঘ ছয় বছরে এ চুক্তির অগ্রগতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এটাকে বাস্তবমুখী ও বাস্তবায়নযোগ্য করতে হবে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দাতা সংস্থাগুলোকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমার ও বাংলাদেশে একই সঙ্গে কাজ করতে হবে। সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সাহায্য ও ত্রাণ চলমান রাখতে হবে। কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর ওপর থেকে চাপ কমাতে হবে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর ও আবাসনে দাতাগোষ্ঠীকে সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। কক্সবাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের আত্মনির্ভরশীল করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের শিক্ষা নিশ্চিত করে রাখাইনে তাদের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সেখানে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক তাদের এ প্রশিক্ষণ কাজে লাগানোর সুযোগ করে দিতে হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যা পুরো ইউরোপ মিলে মোকাবিলা করছে, আর মিয়ানমার সৃষ্ট এ রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশকে একা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের একার পক্ষে এই বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান ও অনির্দিষ্টকাল ধরে এ বোঝা বহন করা সম্ভব নয়। একটা জনবহুল ও উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে এ সমস্যা থেকে উত্তরণে সহযোগিতা করার জন্য জাতিসংঘ, বিশ্ব সম্প্রদায় ও দাতা সংস্থাগুলোকে সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় সমন্বয়পূর্বক কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশের। তাই এই সমস্যা সমাধানের সম্মিলিত উদ্যোগ বাংলাদেশকেই নিতে হবে।

লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক