সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

প্রথমবারের মত বিজিবির সেরা নারী সৈনিক হয়েছেন পাপিয়া

প্রকাশিতঃ ১৬ জুলাই ২০১৭ | ৭:১৫ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম: প্রথমবারের মতো সব বিষয়ে সেরা সৈনিকের পুরস্কার পেয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একজন নারী সৈনিক; তিনি হলেন পাপিয়া আক্তার। রোববার সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে বিজিবি’র ৯০ তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে এই পুরস্কার দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন বিএসএফ মহাপরিচালক কে কে শর্মা। এ সময় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামরিক ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, বোমাং সার্কেলের সম্মানিত রাজা প্রকৌশলী উচ প্রু চৌধুরীসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা এবং নবীন সৈনিকদের অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন।

কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার ছিলেন মেজর এ টি এম আহসান হাবীব এবং প্যারেড অ্যাডজুটেন্ট সহকারী পরিচালক মো. শাহাদত হোসেন। ৯০তম ব্যাচের নবীন সৈনিকদের মধ্য থেকে বিষয়ভিত্তিক প্রথম স্থান অর্জনকারী ও সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিককে পুরস্কৃত করা হয়। গতকাল বিজিবিতে যুক্ত হলেন আরও ৯৭ নারী শ্রমিক। প্রথমবারের মতো সব বিষয়ে সেরা সৈনিকের পুরস্তার পেয়েছেন নারী সৈনিক পাপিয়া আক্তার। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে নবীন সৈনিকেরা শারীরিক কসরতের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজ, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন পর্ব ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের দৃশ্যগুলো দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন।

বিজিবিকে একটি দক্ষ, চৌকষ এবং প্রশিক্ষিত বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে কে কে শর্মা বলেন, একটি বলিষ্ঠ ও দক্ষ বাহিনী গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কঠোর প্রশিক্ষণ, সৎচরিত্র, মানসিক দৃঢ়তা, অধ্যবসায়, শৃঙ্খলাবোধ এবং সঠিক নেতৃত্ব।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের মূল পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি।

বিএসএফের মহাপরিচালক তার বক্তৃতায় গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একইসঙ্গে তিনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদদেরকে, স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ এবং মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য এ বাহিনীর আটজন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিতদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।

এর আগে ২০১৫ সালের আগস্টে বিএসএফের আমন্ত্রণে বিএসএফ প্রশিক্ষণ একাডেমিতে প্রধান অতিথি হিসেবে তাদের প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন বিজিবির তৎকালীন মহাপরিচালক। এরই ধাবাহিকতায় দুদেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ এবার বিএসএফ মহাপরিচালক আমন্ত্রিত হয়ে বিজিবি প্রশিক্ষণ সেন্টারে সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করলেন।