রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

রম্য আকাম

| প্রকাশিতঃ ৭ অক্টোবর ২০১৫ | ৬:১৫ অপরাহ্ন

 

:: সঞ্জয় দেবনাথ ::

writingবরকত উল্লা ছেলে রমিজকে নিয়ে ভীষণ বেকায়দায়। রমিজ অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। এই বয়সেই রীতিমত ঝানু নারকেল হয়েছে পেকে। প্রায়ই বরকত উল্লা ছেলের প্রতি হতাশ হয়ে নিঃশ্বাস ফেলেন। একের পর এক আকাম করে রমিজ ইতোমধ্যে বেশ ভালোই সাড়া ফেলেছে। জেএসসির গ-ি এখনো পার না হতেই প্রেমচিরকুট লেখায় দক্ষ হয়েছে। ঘটনা এখানেই শেষ না। স্কুলের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় বাংলাতে রচনা এসেছে তোমার প্রিয় মানুষ। রমিজ পরীক্ষার খাতায় যা লিখেছে তাতে বরকত উল্লার মান-ইজ্জত হাওয়ায় মিলে গেছে। রক্তচাপ উঠে গেছে। রমিজ রচনায় তার প্রিয় মানুষ হিসেবে তার বাবার কথা লিখেছে। বাবার প্রশংসা দিয়ে ভরে ফেলেছে রচনা। সব-ই ঠিক আছে। রচনার একেবারে শেষের দিকে লিখেছে-

নদীর যেমন জোয়ার ভাটা আছে তেমনি প্রতিটি বস্তুর ভালো মন্দ দুইটি দিক আছে। আমার প্রিয় মানুষ অর্থাৎ আমার বাবা অর্থাৎ বরকত উল্লা সাহেবের অনেক গুণ বর্ণনা করলাম। এবার কিছু দোষের কথা বলি।

আমার বাবা প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হলেও কিপটা নাম্বার ওয়ান। কিপটামিতে নোবেল দেয়া হলে আমার বাবা প্রতি বছর সেই নোবেল পেতেন। মাদক ও তামাক দ্রব্য আইনের কারণে সিগারেটের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাবা সিগারেট ছেড়ে বিড়ি খাওয়া শুরু করেন। আমার বাবার ঈমানেও গ-গোল আছে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন-পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। অথচ আমার বাবা অপবিত্রতা ও অপরিচ্ছনন্নতার ডিপো। পারতপক্ষে আমি আমার বাবার কাছে যাই না। কারণ তার কাছে গেলেই বাবার দাঁতের দুর্গন্ধ নাকে আসে। একবার এই দুর্গ›েন্ধর কারণে আমার পেটের পীড়া হয়, যা তিনদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ইশ! কবে যে টুথপেস্টের দাম কমবে? বাবার আরো বেশ কিছু দোষ আছে কিন্তু তা লেখা যাবে না। কথাগুলো গোপন।

বোঝা যাচ্ছে কেন বরকত উল্লা বেকায়দায় পড়েছেন। তিনি পরপর ২টা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন। প্রথম নিঃশ্বাসটা এইভেবে কেন তার ছেলে পরপর ৩ বার পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারলো না। দ্বিতীয়টা এইভেবে যে কেন তিনি তার ছোট বেলায় রমিজের মতো আকাইম্যা ছিলেন।

লেখক: সঞ্জয় দেবনাথ, ইদ্রিস কলোনি (আজম রোড), নাজিরহাট, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।