জসিম উদ্দিন, কক্সবাজার : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২। সময় সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা। এ প্রতিবেদকের কাছে একজন ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে জানতে চান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসার তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকগুলোতে একটি সংবাদ প্রকাশ করা যাবে কি না?
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে প্রতিবেদনটা তাদের তৈরি করা আছে। শুধু পাবলিশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। বিনিময়ে মোটা অংকের টাকার প্রস্তাব দেয়া হয় এ প্রতিবেদককে।
যদিও ওই ব্যক্তি দাবি করেন, আরসাকে নিয়ে কারা রিপোর্ট করাতে চান এবং অর্থের যোগানদাতাই বা কে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। একজন পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে এ প্রস্তাবটা পেয়েছেন তিনি।
এভাবে টাকার বিনিময়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এ প্রতিবেদক।
পরে অনুসন্ধানে নেমে জানা গেল, আরসাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘ত্রাস’ হিসেবে পরিচিত নবী হোসেনের সেকেন্ড ইন কমান্ড মাস্টার মুন্না গ্রুপের মুন্না এ অর্থ ব্যয় করছে।
আরও জানা গেছে, ক্যাম্প কেন্দ্রিক অন্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার পাশাপাশি সর্বত্রই নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নিয়েছে নবী হোসেনের বাহিনী।
ওই দিন এ প্রতিবেদক নবী হোসেন ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড মাস্টার মুন্নাদের ‘তৈরি করা সংবাদটি’ প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করলেও পরদিন ওই প্রতিবেদনটি কক্সবাজারের বেশ কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত হয়।
এ ঘটনার সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গাদের একটি সূত্র দাবি করেছে, ক্যাম্পের কথিত উগ্রবাদী সংগঠন আরসাকে হটিয়ে ক্যাম্পের একক নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া নবী হোসেনের বাহিনী। এজন্য তারা ইতিমধ্যে একটি প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছে। তারা দুঃসাহসিক স্বপ্ন দেখছে, বাংলাদেশের ভেতরেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। আর নবী হোসেনের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
এদিকে নবী হোসেনের বাহিনীর বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা একুশে পত্রিকাকে যে তথ্য দিয়েছেন তা রীতিমতো আঁতকে উঠার মতো।
গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, পার্শ্ববর্তী একটি দেশের কালোবাজার থেকে হাজার কোটি টাকার অত্যাধুনিক ও ভারি অস্ত্র কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ত্রাস হিসেবে পরিচিত নবী হোসেন। চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্রের বিশাল এ চালান হস্তান্তরের জন্য ইতিমধ্যে এক হাজার কোটি টাকা অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে প্রদান করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট হিসেবে পরিচিত সন্ত্রাসী নবী হোসেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় থাইল্যান্ড থেকে মিয়ানমার হয়ে এ অস্ত্রের চালান আনার চেষ্টা করা হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অস্ত্রের চালানের প্রবেশ ঠেকাতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন নবী হোসেনকে হন্য হয়ে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাকে ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা একুশ পত্রিকাকে জানান, নবী হোসেন অস্ত্রের চালান বাবদ হাজার কোটি টাকা কালোবাজারের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে প্রদান করলেও এখন পর্যন্ত অস্ত্র আনতে পারেনি।
তিনি বলেন, মানবপাচার ও মাদকের জন্য কুখ্যাতি পাওয়া মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের মোই নদী মায়ে সোট এবং বার্মিজ শহর মায়াওয়াদ্দির হয়ে অস্ত্রের এ চালানটি আনার চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা। মিয়ানমার সেনাবাহিনী বা সরকার জড়িত না থাকলে এটি কখনো সম্ভব নয় বলে মনে করেন গোয়েন্দা সংস্থার এ কর্মকর্তা।
নবী হোসেন অস্ত্র কেনার জন্য এত বিপুল অংকের টাকা কোথায় পেল? এমন প্রশ্নের জবাবে একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে ৬০ ভাগ মাদকের চালান ঢুকছে নবী হোসেনের হাত ধরে। ইয়াবার পাশাপাশি ভয়ংকর মাদক আইসের নিয়ন্ত্রণও এখন নবী হোসেনের হাতে। এ কারণে নবী হোসেনের হাতে ১০ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার নগদ অর্থ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন’ দেখা নবীকে ধরতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা
দেশের জন্য নবী হোসেন ও তার বাহিনী হুমকি উল্লেখ করে সম্প্রতি নবীকে ধরতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে কক্সবাজারের বিজিবি।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবির বলেন, ‘নবী হোসেন দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাই তাকে ধরতে বিজিবির পক্ষ থেকে ১০ লাখ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আরেক ত্রাস মাস্টার মুন্না নবী হোসেন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশে ৫০ ভাগের বেশি মাদক তাদের হাত ধরে ঢুকছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে নবী হোসেনদের সুসম্পর্ক রয়েছে।’
জানা যায়, দিনে-দুপুরে ডাকাতি, অপহরণ ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়ে ২০১৮ সালে প্রথম আলোচনায় আসেন নবী হোসেন। তিনি রোহিঙ্গাদের কাছে ‘মাস্টার নবী হোসেন’ হিসেবেও পরিচিত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নবী হোসেন বাহিনীর হাতে ৫ শতাধিক অস্ত্র ছিল। এখন তা বেড়ে কয়েকগুণ হয়েছে। দেশীয় অস্ত্রগুলো পাহাড়ি এলাকায় নিজস্ব কারখানায় বানানোর পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমার থেকে এসব অস্ত্র আনা হয়েছে। ডাকাতি, অপহরণের চেয়ে এখন মাদকের কারবারকে প্রাধান্য দিচ্ছে নবী হোসেন।
রোহিঙ্গাদের একটি সূত্র দাবি করেছে, বর্তমানে নবী হোসেনের বাহিনীর অধীনে হাজারের বেশি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সদস্য রয়েছে। তাদের ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ করে পর্যায়ক্রমে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এসব সদস্যদের প্রত্যেককে মাসে ১০ হাজার টাকা বেতন দিচ্ছে নবী হোসেন। মাদকের কারবার থেকে তাদের এ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও মাদক চালান থেকে নিয়মিত কমিশনও পাচ্ছে নবী বাহিনীর সদস্যরা।
রোহিঙ্গাদের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র দাবি করেছে, বাংলাদেশের ভেতরে মিয়ানমার সরকারের সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলাদা দেশ গঠনের দুঃসাহসিক পরিকল্পনা করছে নবী হোসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের সমর্থন আদায়ের লক্ষে তিনি প্রথমে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দাবি করে আন্দোলনের ডাক দেবেন। পরে সে আন্দোলন থেকে স্বাধীন রোহিঙ্গা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ডাক দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বান্দরবান কেন্দ্রিক পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সাথেও হাত মিলিয়েছে নবী হোসেন। পাহাড়িদেরকেও ইয়াবা কারবার ও অস্ত্রের যোগান দিতে সহযোগিতা করছেন নবী হোসেন। প্রায় একই ধরনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা নেতা জানান, রোহিঙ্গাদের জনপ্রিয় নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর আরসার বিরুদ্ধে ক্যাম্পে জনমত গড়ে উঠেছে। প্রশাসনের পাশাপাশি তাদের প্রতিরোধ করছে সাধারণ রোহিঙ্গারা। এতে করে আরসার চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। আরসা এখন নামে বেঁচে আছে মাত্র। কিন্তু এখনো ক্যাম্পের যে কোন ঘটনার জন্য আরসাকে দায়ী করে তাদের আলোচনায় রেখে নবী হোসেন বাহিনী তাদের শক্তি বৃদ্ধি করে চলছে। এ জন্য তারা রোহিঙ্গা ভাষায় বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছে। নিউজ চ্যানেলের মধ্যে “RRV New ও RVR New এবং RRt News, Mayyu tv” অন্যতম।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, মিডিয়া টিমের দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে মাস্টার মুন্নার দুই ভাই ইদ্রিস প্রকাশ জুবাইয়ের ও ওমর ফারুক। নবী হোসেন বা মাস্টার মুন্নার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে এসব চ্যানেলে আরসার তকমা লাগিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, আরসা যেমন রোহিঙ্গাদের জন্য হুমকি, তেমনি নবী হোসেন ও মাস্টার মুন্না গ্রুপও রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি পুরো অঞ্চলের জন্য হুমকি। গতবছর মাস্টার মুন্নার হাতে ৮ জন রোহিঙ্গা খুনের ঘটনা ঘটেছে।
সন্ত্রাসী নবী হোসেনদের সহযোগী কারা?
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অংজউয়িং নামের মিয়ানমারের একজন এমপি রয়েছেন। তার আসল নাম জকির আহমেদ। তিনি আরকান রাজ্যের নাকপ্পুরার মৃত নুরুল আলম ছেলে। তবে বর্তমানে থাকেন ইয়াংগুনে। এমপি অংজউয়িং নবী হোসেনের ঘনিষ্ট আত্মীয় এবং সস্ত্রাসী ‘মাস্টার মুন্নার’ আপন চাচা।
অংজউয়িং এর পরামর্শে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী নবীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে থাকে। এরই অংশ হিসেবে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক ইয়াবা ও আইসের কারখানার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে নবী হোসেন ও মাস্টার মুন্নার হাতে। বিনিময়ে বাংলাদেশে মিয়ানমার সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখন নবী হোসেনের হাতে হাজার কোটি টাকা মূল্যের অস্ত্রের বিশাল চালান তুলে দিতে চায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ ছাড়াও আমেরিকান প্রবাসী রোহিঙ্গা নেতা হাবিব উল্লাহ ও সৌদি প্রবাসী রোহিঙ্গা নেতা হাফেজ কবিরও নবী হোসেনদের পরিকল্পনায় জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
দেশের নিরাপত্তার নিশ্চিতে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ
জানতে চাইলে বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রথম থেকে বলে এসেছি, পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সংকট কখনো সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই যদি হতো ১৯৭১ সালে যুদ্ধ না করে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আমরা নাফ নদীতে যুদ্ধ করেছি, তাদেরকে আমি ভালোভাবে চিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে আগেও অনুরোধ করেছি, এখনো আমার পরামর্শ হচ্ছে, ৩ লাখ রোহিঙ্গাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিন। এরপর তাদের মিয়ানমারে পাঠান। তারা সেখানে গিয়ে যুদ্ধ করে তাদের মাতৃভূমি স্বাধীন করুক। এটি করা গেলে রোহিঙ্গারা আর বাংলাদেশে চিরস্থায়ী থাকার বা এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে না।’
বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমান আরও বলেন, নবী হোসেন রোহিঙ্গা বেশে এ দেশে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু সে মিয়ানমার সরকার ও সে দেশের সেনাবাহিনীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আজকে হাজার কোটি টাকার অস্ত্র আনার চেষ্টাও মিয়ানমারের ষড়যন্ত্রের অংশ। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে। না হয় রোহিঙ্গা সংকট আরও ভয়াবহ হবে।’
মিয়ানমারের সহযোগিতায় হাজার কোটি টাকার অস্ত্রের চালান ও রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘হাজার কোটি টাকা অস্ত্রের চালান আনার চেষ্টার বিষয়টা এখনো আমি জানি না। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া করা হবে।’ এ সময় দেশবিরোধী কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বেশ কয়েকটি এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সন্ত্রাসী নবী হোসেন ও মুন্নার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য
ভয়ংকর সন্ত্রাসী নবী হোসেন কয়েকমাস ধরে সীমান্তবর্তী তোতার দ্বীপ অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। সেখানে থেকে যখন তখন মিয়ানমারে যাওয়া আসা করতে পারেন তিনি। ওই দ্বীপে দেশের কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। অন্যদিকে মাস্টার মুন্না দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এরপরও দীর্ঘদিন ধরে মাস্টার মুন্না ও তার সহযোগীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এপিবিএনের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক বলেন, ‘মাস্টার মুন্না ক্যাম্পে আছে কি না, থাকলেও কোন কাম্পে রয়েছে তা জানি না। তবে নবী হোসেন ও মাস্টার মুন্না এবং তাদের সহযোগিদের ধরার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেকোন সময় হয়তো সফলতা আসবে। অনেক সন্ত্রাসীকে ইতিমধ্যে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’
র্যাব-১৫ কক্সবাজারের অধিনায়ক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা দেখভাল করার জন্য সেখানে একটা আলাদা বাহিনী রয়েছে। তাই শতভাগ নিশ্চিত হয়ে আমরা শুধু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড় অভিযানগুলো পরিচালনা করে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘নবী হোসেন ও মাস্টার মুন্না যেহেতু বড় মাপের সন্ত্রাসী, তাই তাদের ধরার জন্য আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’