সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

সিম চালু রাখার নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন

| প্রকাশিতঃ ৩১ মে ২০১৬ | ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

courtঢাকা: ৩১ মে’র মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধন না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বারে এই আবেদন করা হয়।

সিম নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক এ আবেদন করেছেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এই আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে। হাইকোর্ট সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে বৈধ বলে রায় দেন। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। আমরা পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করবো। কিন্তু তার আগে সরকার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করলে ৩১ মে’র পর অনিবন্ধিত সিম সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাই সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছি। আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এস এম এনামুল হক নামের এক আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। গত ১৪ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম কেন অবৈধ নয় তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

রুলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহা-পরিচালক (ডিজি) ও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোসহ ১৩ জনকে জবাব দিতে বলা হয়।

পরে এ বিষয়ে দু’দিন শুনানির পর রুল নিষ্পত্তি করে গত ১২ এপ্রিল বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। তবে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, নির্বাচন কমিশন যেন আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে। এ ছাড়া বিটিআরসি’র দেয়া নিয়ম যথাযথভাবে অনুসরণ করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আঙুলের ছাপের অপব্যবহার হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধেই আপিল করবেন রিটকারী পক্ষ। তবে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এখনও প্রকাশ না হওয়ায় এই আপিল দায়ের হয়নি। এজন্য সোমবার রিটকারীর পক্ষে আবেদন জানিয়ে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরোনো সিমের পুনর্নিবন্ধন চলছে। গত ৪ এপ্রিল আঙুলের ছাপ নিয়ে জনমনে শঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে সিম নিবন্ধনের জন্য সংগৃহীত আঙুলের ছাপের অপব্যবহার করলে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা।

ভুয়া পরিচয়ে অথবা নিবন্ধন ছাড়া সিম কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় সম্প্রতি গ্রাহকদের তথ্য যাচাই ও সিম পুনর্নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর মোবাইল গ্রাহকদের সিমের তথ্য যাচাইয়ে শুরু হয় জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া।