রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ইকবাল সোবহানের

| প্রকাশিতঃ ২৮ মে ২০১৬ | ৭:০৭ অপরাহ্ন

iqbal sobhanচট্টগ্রাম: সাংবাদিকতার মর্যাদা রক্ষার জন্য সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান হানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়োজিত ‘সাংবাদিকদের মর্যাদা, শ্রম আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে শনিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বিভক্তি থাকায় সাংবাদিক হত্যার বিচার পাচ্ছি না। দলীয় রাজনীতির বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সম্পাদকীয় ইনস্টিটিউশন বলে আজ কিছু নেই। মর্যাদা হারিয়েছে। তাই সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষার কাজটি দুরূহ হয়ে পড়েছে। সাংবাদিকতার মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রথম কাজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস। সিইউজে, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সেই ঐতিহ্য, স্বাধীনতার চেতনা ধরে রেখেছে। নিরপেক্ষতার কথা বলি আমরা। স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সাংবিধানিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রশ্নে নিরপেক্ষ থাকতে পারি না।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষা ও অধিকার দিতে ১৯৭৪ সালে সংবাদপত্র আইন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার রাতের আধারে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে সাংবাদিকদের শ্রম আইনের অধীনে নিয়ে যায়। যার ফলে সাংবাদিকরা শ্রমিকে পরিণত হলো। বর্তমান সরকার পুনরায় ১৯৭৪ সালের আইনে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের ৯ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী খুবই সংবেদনশীল। তিনি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান না। গণমাধ্যমকে শৃঙ্খলবদ্ধ করতে চান না। গণমাধ্যমের বিকাশকে সংরক্ষণ করতে চান তিনি। টেলিভিশন সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনা হবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার জন্যে নীতিমালা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একের পর এক চাকরি যাচ্ছে। রুখতে পারছি না। এক চেকে টাকা দিচ্ছে অন্য চেকে ফিরিয়ে নিচ্ছে। ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে সংগঠনের মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে। ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। মালিক শোষণ করবে, এটা তাদের চরিত্র। শ্রমিক অধিকার আদায়ে আন্দোলন করবে, এটা তাদের চরিত্র। কিন্তু শ্রমিকরা সেটা করতে চান না, ঝুঁকি নিতে চান না। যদি ভাবেন, সরকার অধিকার আদায় করে দেবে, তাহলে হবে না। ঝুঁকি নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের সাংবাদিকেরা পিছপা হন না। আন্দোলন করতে গিয়ে জেলে গেছেন, হামলার শিকার হয়েছেন-এসবের তুলনা হয় না। এখনও নিত্য হুমকি-ধমকির মধ্যে মানুষের অধিকারের কথা বলে যাচ্ছেন তারা। এদেশের সংবাদপত্র প্রয়োজনের সময় বিরাট কাজ করেছে। আমাদের দেশে সাংবাদিকতার ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল। এ সরকার গণতান্ত্রিক সরকার। তাই সাংবাদিকদের দাবি সরকার মেটাবে বলে আমি আশাবাদি।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। আলোচনা করেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটির আহ্বায়ক ড. সেকান্দর চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি শহীদ উল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, সিইউজের সাবেক সভাপতি অঞ্জন কুমার সেন, এম নাসিরুল হক, প্রতিনিধি ইউনিট প্রধান সমীর কান্তি বড়–য়া।