রেহানা বেগম রানু : চৈত্রের শেষ সপ্তাহের কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় গরম তেমন অনুভূত হয়নি। তবে বৈশাখের শুরুতেই অবস্থা পাল্টেছে। গরম বাড়ছে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। বিশেষ করে বৃষ্টি না হওয়ায় তা অসহনীয় উঠছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টি না হলে এ গরম আরও বাড়বে। চলতি মাসে দেশে অন্তত তিনটি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। উত্তরবঙ্গে এর প্রভাব থাকবে সবচেয়ে বেশি। এসময় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। তাপপ্রবাহের পাশাপাশি কালবৈশাখীও হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে গরম আরও বাড়তে থাকবে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ায়ী, গত ৬ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সেদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর আর রাজধানীতে বৃষ্টি হয়নি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শনিবার দুপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
ঢাকার চেয়েও দেশের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে গরম আরও বেশি পড়েছে। এসব অঞ্চলের অধিকাংশ স্থানে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পাশের জেলা খুলনায় ৩৬ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৩, ঈশ্বরদীতে ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ফরিদপুর, টাঙ্গাইল জেলাতে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। বৃষ্টির অভাবের সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের মাত্রাও কিছুটা বেশি রয়েছে ফলে এসব জায়গায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। চলতি মাসে দেশে তিনটি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গে এর প্রভাব থাকবে বেশি। তাপপ্রবাহে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছুঁয়ে যেতে পারে। তাপপ্রবাহের পাশাপাশি কালবৈশাখীও হতে পারে।
এদিকে কালবৈশাখীর কারণে সৃষ্ট টর্নেডোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সপ্তাহ কেটে গেছে। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত সময় টর্নেডোর জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। তবে, দুয়েকদিন আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ সময় বিবেচনা শুরু হয়। এই ধরনের টর্নেডো ঝড়ের জন্য বেশি ঝুঁকিতে ছিলো ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ফরিদপুর ও মাদারিপুর এবং চাঁদপুর অঞ্চল।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, এই সময়টাতে গরম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। প্রতি বছরই এমনটি হয়ে থাকে। পরে বৃষ্টিপাত শুরু হলে এই তাপমাত্রা কমে আসে। তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠলে মাঝারি ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে এটিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এখন যে ধরনের তাপপ্রবাহ চলছে, সারাদেশে তা রাজধানী ঢাকাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর সঙ্গে বৃষ্টি না হওয়ায় গরম বাড়ছে। এটি আরও বাড়তে পারে।