চট্টগ্রাম: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বৃহষ্পতিবার রাতে দূযোর্গ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামের সকল সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব রকমের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এদিকে শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সম্ভাব্য সবধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা পর্যায়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। চট্টগ্রামের সকল উপজেলায় পৃথক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাও সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রামের উপকূলীয় সকল স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে ভাবে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরা ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার কাজের জন্য উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে অবস্থান করছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপক’লীয় এলাকাগুলোতে পাঠানো হয়েছে শুকনো খাবার। একই সাথে রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর ৬১১৫৪৫। যে কেউ এই নম্বরে ফোন করে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে যে কোন তথ্য জানতে পারবেন।
এদিকে শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জানান, শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর আনোয়ারা ও বাঁশখালীর উপক’লীয় এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি বাঁশখালী-আনোয়ারা উপকূল দিয়ে আঘাত হানার সম্ভাবনার কথা আসায় ওই এলাকায় বাড়তি সতর্ককতা অবলম্বন করা হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন।
এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। শুক্রবার বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শেখ হাসানুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভারতের অন্ধ প্রদেশের উপকূলের উত্তর-উত্তরপূর্ব দিক থেকে ‘রোয়ানু’ নামের ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই বাংলাদেশ উপক’লের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তাই চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর ও মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।