রিদওয়ানুল ইসলাম : মধ্য মাদার্শা! হালদার কোল ঘেঁষে গ্রামটি। ওলি-আউলিয়াদের স্মৃতিধন্য গ্রাম। আজকের লেখাটি মাদার্শার অনিন্দ্য সুন্দর আকবর শাহ মসজিদ নিয়ে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১৩ নং দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নস্থ মাদার্শা গ্রামেই এই মসজিদের অবস্থান। অলিকুল শিরোমণি হযরত আকবর শাহ’র (রহ.) নামেই এর নামকরণ।
জনশ্রুতি আছে, সুদূর ইয়েমেনের অধিবাসী ছিলেন এ সাধক পুরুষ। তাঁর স্মৃতিধন্য অনিন্দ্য স্থাপনা এই মসজিদটি। শুধু মসজিদই নয়; উনার নামেই এখানে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, গণপাঠাগার, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে সবসময় নজর কেড়েছে মসজিদটিই। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিনিয়তই মানুষ ছুটে আসেন এই মসজিদ দেখতে। চট্টগ্রামের অন্য যে কোন মসজিদের চেয়ে এর নির্মাণশৈলী কোন অংশেই কম নজরকাড়া নয়।
লাগোয়া পুকুর, সুবিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থান, পূর্ব পাশেই হালদার অবস্থান; ধর্মীয় দিক ছাড়াও এর অবস্থানগত গুরুত্বও এই মসজিদকে অনন্য বানিয়েছে।
মানত পূরণের উদ্দেশ্যেই বেশিরভাগ দর্শনার্থী আসেন মসজিদটিতে! তবে অনন্য আরেকটা দিকও আছে এই মসজিদের। আচারগত কোন ধরণের বাড়াবাড়ি এখানে নিষিদ্ধ। রয়েছে মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা।
প্রচলিত রয়েছে, এই মসজিদে মানত করে কোন কিছু চাওয়া হলেই সেটা পূরণ হয়; এমন একটা বিশ্বাস কাজ করে এই মসজিদকে কেন্দ্র করে। লোকমুখে এর সত্যতাও প্রমাণিত।
হযরত আকবর শাহ’র কবরের কোন চিহ্নও এখানে দেখা যায় না এবং দর্শনার্থীদের কাছে এটাও বিস্ময়ের। অন্যান্য ধর্মীয় দর্শনীয় স্থানগুলোর চেয়ে এটা সম্পূর্ণ বিপরীত।
এলাকাবাসীর কাছে এর একটা অসাম্প্রদায়িক রূপও রয়েছে। মসজিদ হলেও সনাতনী বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের কাছেও এই মসজিদ এক স্বতন্ত্র রূপ নিয়েই বিরাজমান। মানতের বেলায় অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছেও এক পরম আশ্রয় এই মসজিদ।
ঘুরে আসতে পারেন আপনিও; চট্টগ্রাম শহরের যে কোন জায়গা থেকেই কাপ্তাই রাস্তার মাথা হয়ে মদুনাঘাট। সেখান থেকে আকবর শাহ মসজিদ বললে যে কেউ পথ বাতলে দেবে।
লেখক : ক্রিয়েটিভ হেড, টকস্টোরি